কেরানীগঞ্জ (ঢাকা)প্রতিনিধি : কেরানীগঞ্জে নকল রেমিটেন্স পেমেন্ট স্লিপ এর মাধ্যমে অভিনব কায়দায় ব্যাংক থেকে রেমিটেন্সের টাকা জালিয়াতি করে উত্তোলনকারী চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই চক্রটি পাঁচটি ব্যাংকের ১১ টি শাখা থেকে প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা ব্যাংক কর্মকর্তাদের বোকা বানিয়ে উত্তোলন করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে রিপন মিয়া ওরফে হোন্ডা রিপন (৩৮),রহিম মুন্সী (২৮),মোহাম্মদ জুয়েল (৩১),কুলসুম বেগম (৪০) ও আসাদুজ্জামান স্বপন (৫০)।
আজ রোববার দুপুরে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান এই তথ্যটি জানান। সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো জানান,গত ৩ মে সকাল ১১ টা থেকে ১২ টার মধ্যে অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জন প্রতারক দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক হাসনাবাদ শাখায় প্রবেশ করে রেমিটেন্স প্রদান কারী অফিসারের হুবহু স্বাক্ষর ও সিল নকল করে ২টি রেমিট্যান্স কাউন্টার থেকে ৫ টি জাল রেমিটেন্স পেমেন্ট স্লিপের মাধ্যমে ব্যাঙ্ক কর্মকা তাদের বোকা বানিয়ে প্রায় ৬ লক্ষ টাকা উত্তোলন করে নিয়ে পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে ব্যাংকের হিসেবে গড়মিল দেখা দিলে ব্যাংক কর্মকর্তারা সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে দেখতে পান যে ওইদিন ২জন বোরকা পরা মহিলা ও মুখে মাস্ক পরা ৩জন পুরুষ ৫ টি জাল রেমিটেন্স পেমেন্ট স্লিপের মাধ্যমে রেমিটেন্স প্রদান কারী কাউন্টার থেকে উল্লেখিত টাকা উত্তোলন করে নিয়ে যায় । এ সময় তাদের সহায়তা করার জন্য ব্যাংকের বাহিরে আরো ৪/৫পাঁচজন অজ্ঞাতনামা লোক ঘোরাফেরা করতে থাকে। এই ঘটনায় গত ১২ জুন সোশ্যাল ইসলামিক ব্যাংক হাসনাবাদ শাখা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এই মামলার ভিত্তিতে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে সেগুলো ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে এই প্রতারক চক্রকে সনাক্ত করা হয়। পরে গাজীপুর, রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে এই প্রতারক চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। তারা অকপটে এই প্রতারণা করে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের কথা স্বীকার করেছে। তাদের দলে আরো ১৫/২০জন সক্রিয় সদস্য রয়েছে।
এই চক্রটি কেরানীগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাঁচটি ব্যাংক এর ১১টি শাখা থেকে রেমিটেন্সের ৭০লক্ষ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে উত্তোলন করেছে। বাকিদেরকেউ গ্রেফতারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে কিছু টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস-দক্ষিণ) আমিনুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কেরানীগঞ্জ সার্কেল শাহাবুদ্দীন কবির প্রমুখ।