নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার শিকারীপাড়ার টিকেএম উচ্চ বিদ্যালয়ে বোরকা পড়ে বিদ্যালয়ে আসায় ছাত্রীরা হেনস্তার শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। শিক্ষার্থীরা অত্র বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক কাজী আব্দুল মুন্নাফের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিক্ষার্থীরা জানান, আমরা বোরখা পড়ে স্কুলে আসায় দীর্ঘদিন ধরে আমাদের নানা রকম ইঙ্গিত, বাজে ব্যবহার, গালাগালি, মারধর ও বিদ্যালয় থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দিচ্ছেন আমাদের বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক কাজী আব্দুল মুন্নাফ।
শিক্ষার্থীরা আরও জানান, স্যার আমাদেরকে নানাভাবে বিরক্ত করে আসছেন। তিনি কারণে অকারণে আমাদের হাত ধরেন। আমরা স্যারকে যদি বলি স্যার হাত না ধরেও তো কথা বলা যায়। স্যার আমাদের বলেন তোদের হাত না ধরলে আমার কথা বলতে ভালো লাগে না। এমনকি কথা বলতে বলতে আমাদের মাথায়, পিঠেও হাত দেন তিনি। আসলে আমরা স্যারের কাছ থেকে নানাভাবে হেনস্থার শিকার হচ্ছি। শিক্ষার্থীরা বলেন, এতো দিন স্যারের ভয়ে আমরা অনেক কিছু সহ্য করছি, কিন্তু আর না। তাই আমরা এখন স্যারের এমন কুরুচি চরিত্রের বিরুদ্দ্বে কথা বলতে বাধ্য হচ্ছি।
জানা যায়, কাজী আব্দুল মুন্নাফ শিকারী পাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আলিমুর রহমান খান পিয়ারার বোন জামাতা হওয়ার কারণে অবিভাবক ও ছাত্র ছাত্রীরা ভয়ে এতোদিন কিছুই বলেননি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন পরিক্ষার্থী নববাংলাকে বলেন, মঙ্গলবার আমরা বিদ্যালয়ে এসাইনমেন্ট জমা ও আনার জন্য বোরকা পড়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করি। আমাদের বোরকা পড়ে আসাটা কাজী আব্দুল মুন্নাফ স্যারের নজরে আসে। আমরা ক্লাসে প্রবেশ করলে তিনিও একটু পরে আমাদের ক্লাসে প্রবেশ করেন। তিনি এসেই উচ্চ মেজাজে আমাদের সকলকে বোরকা খুলতে বলেন। আমরা বোরকা খুলতে অস্বীকৃতি জানালে তিনি আমাদের মারধর করার চেষ্টা করেন এবং আজে বাজে কথা বলেন। শুধু তাই নয় তিনি সকল ছাত্র ছাত্রীদের সামনে আমাদের বোরকা খুলতে বাধ্য করেছেন। এছাড়া তিনি আমাদের ভয় দেখিয়ে বলেন, যারা বোরকা পড়ে স্কুলে এসেছে তাদের নামের লিষ্ট তৈরী করে লাল কালি দিয়ে মার্ক করে রাখবো। এদের কাউকেই আমি এসএসসি পরিক্ষার এডমিট দিবো না।
বোরকা পড়ে স্কুলে গিয়ে হেনস্থা হওয়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বলেন, ভাই আমাদের হাত-পা বাঁধা। তারা প্রভাবশালী, এজন্য কিছু বলতে সাহস পাই না। আমরা স্যারের এই আচরণে মর্মাহত।
বোরকা পড়তে বাধা দেওয়াসহ তার বিরুদ্ধে আসা নানা অভিযোগের কারণ জানতে চাইকে কাজী আব্দুল মুন্নাফ তার সমস্ত দোষ স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করেন।
এব্যাপারে জানতে চাইলে নবাবগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিকী নূর আলম বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিলো না। আমি এখনই পদক্ষেপ গ্রহণ করছি।