সিংগাইর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি : সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে চাকরি দেয়ার কথা বলে প্রতারণা করে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তি মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার সায়েস্তা ইউনিয়নের মোসলেমাবাদ গ্রামের মো. সহিদের পুত্র ইমরান হোসেন। সে নিজেকে গোয়েন্দা অফিসার পরিচয় দিয়ে এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। সেই সাথে ইমরান বিভিন্ন সময় পুলিশের ডিআইজি‘র বোনের জামাইয়ের আত্নীয় পরিচয়ে দিয়ে থাকেন।
সমবায় সমিতি ও সরকারি চাকরি দেয়ার নামে অর্থ আত্মসাৎ এবং প্রতারণার অভিযোগে জনৈক ব্যক্তি জেলা পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ সুপারের কাছে দেয়া অভিযোগটির তদন্তে নেমেছেন জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। ভুক্তভোগী রাশেদুল ইসলাম ইসলাম খোকন বলেন, আমি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে জব করি। শিক্ষক পদে সরকারি চাকরির শত ভাগ নিশ্চিয়তা দিয়ে ইমরান ও তার ছোট ভাই সজিব এবং চাচা কহিনূর ইসলাম মিলে আমার কাছ থেকে ৮ লাখ টাকা নিয়েছে। চাকরি না হওয়ায় টাকা ফেরত দেয়ার কথা বলে দীর্ঘদিন যাবৎ ঘুরাচ্ছেন।
এ ছাড়া সাইফুল ইসলামের কাছ থেকে ৩ লাখ, মোখলেছুর রহমানের ২ লাখ , জসিম উদ্দিনের ৩ লাখ , মাসুদ রানার ৩ লাখ , নাজমুলের আড়াই লাখ, সোহেলের ৩ লাখ ও মিষ্টারের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে তারা। ভুক্তভোগী মাসুদ রানার স্ত্রী রোজিনা আক্তার বলেন, ইমরান আমার স্বামীকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে চাকরি দেয়ার কথা বলে নিয়োগ পরীক্ষার এক মাস আগে ৩ লাখ টাকা নিয়েছে। চাকরিতো দূরের কথা টাকাগুলোও ফেরত দিচ্ছে না।
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষয়টি তদন্ত করলে ইমরানের আরো এমন একাধিক প্রতারণার কাহিনী বেরিয়ে আসবে। অভিযুক্ত ইমরানের চাচাত ভাই আব্দুল মালেক বলেন, পুলিশের ডিআইজি ও তার বোনের জামাইয়ের সাথে সুসম্পর্কের কারণে ইমরান এলাকার কাউকে কিছু মনেই করে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী জানান, আমার জানামতে, ৬-৭ জনের কাছ থেকে চাকরি দেয়ার কথা বলে টাকা নিয়েছে।
ভুক্তভোগীর সংখ্যা আরো বেশীও হতে পারে। আগামী মাসে টাকাগুলো ফেরত দেয়ার কথা হওয়ায় পত্রিকায় রিপোর্ট না করার অনুরোধ করেন তিনি। সায়েস্তা ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ড মেম্বার মো. আজিজুল বলেন, আমি ও সাহরাইল উচ্চ দ্যিালয়ের আলী মাষ্টার মিলে একটা মিডিয়া করেছি। যে ৪-৫ জন লোক শিক্ষক পদে চাকরির জন্য টাকা দিয়েছেন। আগামী জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে তাদের অভিভাবকদের সাথে বসে ওই টাকাগুলো ফেরত করা হবে।
এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত মো. ইমরান হোসেন শিক্ষক পদে চাকরি দেয়ার নামে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, এ বিষয়ে সত্যতা পেলে রিপোর্ট করবেন তাতে সমস্যা নেই।
এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সহকারি উপ-পরিদর্শক মো. কুদ্দুস আলী বলেন, সমবায় সমিতির অর্থ আত্মসাৎ ও সরকারি চাকরি দেয়ার নামে ইমরানসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ হাতে পেয়ে মোসলেমাবাদ গ্রামে গিয়েছিলাম। দু’পক্ষকে নোটিশ দিয়ে আগামী ১৩ জানুয়ারি অফিসে আসতে বলা হয়েছে।