ডেস্ক : বঙ্গোপসাগর তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ শক্তি বাড়িয়ে প্রবল রূপ নিয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সাগর বিক্ষুব্ধ থাকায় দেশে সমুদ্র বন্দরগুলোকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ এ কে এম রুহুল কুদ্দুস জানান, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও আরও ঘনীভূত হয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পর একই এলাকায় অবস্থান করছে।
মঙ্গলবার সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ৫৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে; কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ- পশ্চিমে; পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে এবং মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল এ ঘূর্ণিঝড়।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার; যা দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১১৭ কিলোকিমটার পর্যন্ত বাড়ছে।“অনুকূল আবহাওয়া পরিস্থিতির কারণে প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর-উত্তরপশ্চিমে অগ্রসর হয়ে বুধবার ভোর নাগাদ উত্তর পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় পৌঁছাতে পারে,” বলেন এ কে এম রুহুল কুদ্দুস।
জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি বুধবার ভোর নাগাদ উত্তর ওড়িশা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের কাছে পৌঁছাবে। উপকূল অতিক্রম করতে দুপুর নাগাদ লাগতে পারে।
সাগর উত্তাল থাকায় উত্তর বঙ্গোসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পযন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
করোনাভাইরাসের মহামারীর মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে উড়িষ্যা ও পশ্চিমবঙ্গজুড়ে ব্যাপক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।বাংলাদেশ সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিলেও ইয়াসের গতিপথ দেখে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান আশা করছেন, ঝড়টি এই পথে এগোলে বাংলাদেশের ক্ষতির ঝুঁকি কমবে।
ভারতের আবহাওয়া বিভাগ আভাস দিয়েছে, মঙ্গলবার প্রথম প্রহরেই ইয়াস শক্তি বাড়িয়ে তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, তখন এর কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটারে উঠতে পারে। আর যখন এটি উপকূলে আঘাত হানবে, তখন এর গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৫৫ থেকে ১৬৫ কিলোমিটার, যা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৮৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে।
ঘূর্ণিঝড়টি আরও শক্তি বাড়িয়ে ‘অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে’ রূপ নিয়ে বুধবার দুপুর নাগাদ সাগর দ্বীপ ও প্যারাদ্বীপের মধ্য দিয়ে উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে। তখন বাতাসের বেগ ঘণ্টায় ১৬৫ কিলোমিটারে উঠতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শনিবার সাগরে সৃষ্টি হওয়া লঘুচাপ রোববার তা নিম্নচাপে রূপ নেয়। সোমবার সকাল ৬টায় গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ এ পরিণত হয়।