নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালীতে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতার ঘটনা বেড়েছে এবং নিত্য নতুন আঙ্গিকে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা হচ্ছে। চলতি বছরের এপ্রিল-জুন পর্যন্ত সময়ে জাতীয় ও স্থানীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ এবং নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের তথ্যানুযায়ী তিন মাসে নোয়াখালীতে ১০ জন শিশু ও নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছে, অপহৃত হয়েছে তিন জন কিশোরী, আত্মহত্যা করেছে পাঁচ জন গৃহবধু, বলৎকারের শিকার হয়েছে এক শিশু, ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে ছুরিকাহত করা হয়েছে একজন নারীকে, নৃশংসভাবে হত্যার শিকার হয়েছে মা ও মেয়ে, স্বামীর সাথে বেড়াতে গিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে এক নববধু।
বৃহষ্পতিবার (৩ জুলাই) জেলা শহর মাইজদীর স্থানীয় একটি রেস্টুরেন্ট নোয়াখালী নারী অধিকার জোট আয়োজিত জেলায় সংগঠিত নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা বিষয়ক ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে আসে। এছাড়া নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা হয়েছে ১৯০ টি।
নারীর প্রতি সহিংসতা বিষয়ক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন নারী অধিকার জোটের আহবায়ক লায়লা পারভীন, সদস্য সচিব মনোয়ারা মিনু, সদস্য রওশন আক্তার লাকী ও ফৌজিয়া নাজনীন। লিখিত ওই প্রতিবেদনে পূর্বের তুলনায় এ প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
তারা বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা বৃদ্ধির বিষয়টি নাগরিক সমাজকে শঙ্কিত করে। কোম্পানীগঞ্জের দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় দায়িত্বশীলদের অবহেলা আছে কিনা, পাঁচজন গৃহবধুর আত্মহত্যার ঘটনায় হত্যাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখা দরকার বলে মনে করেন। ক্ষেত্র বিশেষে নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনায় ভিকটিমকে দোষারোপ করার অপচেষ্টা পরিলক্ষিত হয়, যা নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গির আরেকটি বহিঃপ্রকাশ।
এসময় বক্তরা বলেন, নারীর বিরুদ্ধে সংগঠিত সহিংসতার বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন, অপরাধ দমনে সাধারণ জনগণের পাশাপাশি রাজনৈতিক নেতা এবং জনপ্রতিদের এগিয়ে আসলে গ্রাম ও শহরে নারী নির্যাতন বন্ধ করা সম্ভব হবে।