ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলায় জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালিত হয়েছে। শনিবার (১০ নভেম্বর) উপজেলার আগলা ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গনে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। নবাবগঞ্জ উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের সাবেক ও বর্তমান নেতৃবৃন্দ এর আয়োজন করেন।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ‘প্রয়াত বিএনপি নেতা আব্দুল মান্নান নবাবগঞ্জবাসীর জন্য নিরলসভাবে কাজ করেছে গেছেন। তিনি নবাবগঞ্জবাসীর কাছে একজন শান্তিপ্রিয় ও নিরহংকারী নেতা হিসেবে সর্বস্তরে গ্রহণযোগ্য। যারা অন্যদল করে তাঁরাও একবাক্যে আব্দুল মান্নানকে যোগ্য নেতা হিসেবে স্বীকার করেন। তার সুযোগ্য কন্যা ব্যারিস্টার মেহনাজ মান্নান বাবার আদর্শে বিশ্বাসী। দোহার নবাবগঞ্জের মানুষ আগামী নির্বাচনে মেহনাজ মান্নানকে ঢাকা-১ আসনের এমপি হিসেবে দেখতে চায়।’
বক্তব্যে নেতারা আরো বলেন, যারা গত ১৭ বছর আওয়ামী লীগের নির্যাতন শিকার হয়েছি তাদের বাদ দিয়ে একটি গ্রুপ আওয়ামী লীগের দালালদের বিএনপিতে ঢুকিয়ে দলের বিভক্ত সৃষ্টি করছেন। তারা ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে পকেট রাজনীতির চেষ্টা করছেন যা বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীরা মেনে নিবে না।
বিএনপির নেতারা বলেন, বিএনপির বড় দল এখানে গ্রুপিং থাকতে পারে তবে, দিন শেষে আমরা সবাই শহীদ জিয়ার আদর্শে বিশ্বাসী। কিন্তু নবাবগঞ্জের একটি গ্রুপ মান্নান সাহেবের আদর্শের নেতাকর্মীদের বাকা চোখে দেখেন। তারণ্যের প্রতীক তারেক রহমান যাকে নমিনেশন দিবে আমরা তাদের জন্য কাজ করবো।
তারা বলেন, বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে পরেছেন। আমরা তাদের হুশিয়ারী করে বলতে চাই, বিএনপিতে কোনো চাঁদাবাজের জায়গা হবে না। যারা বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজি ও দখলবাজিতে জড়িয়ে পড়ছেন তারা মনে প্রাণে স্বৈরচার আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন। আমরা তাদের ষড়ষন্ত্র সফল হতে দিব না। মেহনাজ মান্নানের নেতৃত্বে আমরা দোহার ও নবাবগঞ্জ বিএনপিকে সুসংগঠিত করে তুলবো।
বিএনপির নেতারা দলের কর্মীদের সর্তক করে বলেন, নবাবগঞ্জের কিছু নেতা এখনই বিএনপির নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছেন। আপনাদের মনে রাখতে হবে অন্যায়কারী কোনো দলের হতে পারে না। আব্দুল মান্নান যেমন অন্যায় পছন্দ করতেন না, তার মেয়ে মেহনাজ মান্নানও কোনো অন্যায় মেনে নিবে না। আমরা বিএনপির নেতাকর্মীরা অন্যায় করবো না, অন্যায়কে প্রশ্রয়ও দিব না। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মানুষের উপর নির্মম নির্যাতন করেছিল, যার ফলাফল আপনারা দেখেছন। স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে, তাদের করুন পরিণতি হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আজ সমাজে ঘৃণিত। আপনাদের এ থেকে শিক্ষা নিতে হবে। বিএনপির নেতাকর্মীরা যদি আওয়ামী লীগের মত ভুল করে তবে তাদেরও একই পরিণতি ভোগ করতে হবে। আওয়ামী লীগের করুন পরিনতি থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। প্রয়াত আব্দুল মান্নান একজন শান্তি প্রিয় নেতা ছিলেন। তিনি কখনো ধ্বংসাত্মক রাজনীতিতে বিশ্বাস করেনি। আব্দুল মান্নান যখন এমপি ছিলেন নবাবগঞ্জে সব রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা ও সাধারণ মানুষ নিরাপদে বসবাস করেছে। আমরা যারা মান্নানের কর্মী রয়েছি তারাও তার দিক্ষায় দীক্ষিত হয়ে রাজনীতি করি। আমরাও চাই নবাবগঞ্জ দোহারবাসীর মাঝে আবারও শান্তি ফিরে আসুক। তাই সকলের উচিত প্রয়াত আব্দুল মান্নানের সুযোগ্য কন্যা মেহনাজ মান্নানের নেতৃত্বে দোহার ও নবাবগঞ্জ ঐক্যবদ্ধ করা।
তারা আরো বলেন, একটা উর্বর জমি তৈরি করেছিল। যার মালি হিসেবে ছিলেন আব্দুল মান্নান। কিন্তু এখন সেই বাগানে মাকরশা বাসা বেধেছে। মাকড়শার জালে যা ধরা পড়ছে তারা গিলে খাচ্ছে। বিএনপিকে অযোগ্য নেতাদের বিতারিত করে যোগ্যদের নেতৃত্বে আনতে হবে। জেলা নেতৃবৃন্দের কাছে আবেদন জানান তারা। ধানের শীষ প্রতীক যে পাবে তার জন্য সবাই কাজ করবে তবে অবশ্যই দোহার নবাবগঞ্জে স্বচ্ছ রাজনীতি ফিরিয়ে আনতে হবে। যারা বিভক্ততে আছেন তাদের সাথে কাজ করতে চাই। তবে যোগ্যতার ভিত্তিতে নেতাদের দায়িত্ব দিতে হবে।
নবাবগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবেদ হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুন আর রশিদ ওসমানী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন বিএনপি নেতা আব্দুল বাতেন।
উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা আব্দুস রশিদ, মো. হাবিবুর রহমান পান্নু, মো. তপন মোল্লা, খন্দকার শাহীন, রফিকুল ইসলাম রফিক, হুমায়ন মোল্লা, সালাউদ্দিন, এ্যাড. আতাউর রহমান, সেলিম চৌধুরী, মো. সিরাজ মিয়া, আওয়াল আকন, আমজাদ হোসেনসহ আরো অনেকে।