নিজস্ব প্রতিবেদক: দীর্ঘ ২২বছর পর ভোটের দেখা পেলো পৌরবাসী। উৎসব মুখর ভাবে ভোটাররা তাদের ভোট দিতে পেরেছেন। গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলে। প্রার্থী ও ভোটারদের কোন ধরনের অভিযোগ ছাড়াই শেষ হয় ভোট গ্রহণ। তবে সকালের দিকে বহিরাগত ৯জনকে ইউসুফপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে থেকে এবং আজাহার আলী মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা লুৎফরকে আটক করা হয়। পরে আবার তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
সরজমিনে বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি কেন্দ্রেই ভোটারদের উপস্থিতি ছিলো অনেক। তবে সকালের দিকে মহিলাদের উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মত। এসময় ভোট দিতে আসা ভোটার আসমা আক্তার বলেন, আমরা শুরুতে অনেক শঙ্কায় ছিলাম ভোট নিয়ে। কিন্তু কোন ধরনের অপৃতিকর ঘটনা ছাড়াই ভোট দিতে পেরেছি। তার সাথে সুর মিলিয়ে রহিমা বেগম বলেন, আমি ২০০০ সালে এই পৌর সভা নির্বাচনে ভোট দিয়েছি। ঠিক ২২ বছর পর আবার ভোট দিতে পারলাম।
২০০০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর দোহার পৌর সভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর পরে নানা মামলা ও রাজনীতির রোষানলে দোহার পৌরবাসী আর নির্বাচনের দেখা পাইনি। সেই বহুল কাঙ্খিল ভোট অবশেষে অনুষ্ঠিত হলো।
বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোটারদের সাথে কথা বললে তারা জানান, আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্পও বিনিয়োগ উপদেষ্টা ঢাকা-১ আসনের সাংসদ সালমান এফ রহমানকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি, তিনি তার নির্বাচনী ওয়াদা রেখেছেন। প্রভাবমুক্ত, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ ভোটের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
দোহার পৌরসভায় প্রায় ৪৩ হাজার ভোটার রয়েছে। নির্বাচন অফিসের তথ্য মতে ২১টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ৮জন মেয়র প্রার্থী, ৬১জন কাউন্সিলর প্রার্থী এবং ১২ জন সংরক্ষিত নারী প্রার্থী সহ মোট ৮১জন প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশ নেয়। এদের মধ্যে মেয়র পদে আলমাছ উদ্দিন জগ প্রতিকে ৬৬৯৪ ভোট পেয়ে বেসরকারি ভাবে দোহারের পৌর পিতা নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম বাবুল হেলমেট প্রতিকে ৫০২৩ ভোট পান। পর্যায় ক্রমে আব্দুর রহমান আকন্দ নারিকেল গাছ প্রতিকে ৪৫৬৬ ভোট, জামাল বেপারী মোবাইল ফোন প্রতিকে ২৬০৯ ভোট, নুরুল ইসলাম ইস্ত্রী প্রতিকে ২৫৫০, জাহাঙ্গীর আলম চামচ প্রতিকে ২৩০৫ ভোট, আমজাদ হোসেন হাতপাখা প্রতিকে ১০৩৮ ভোট, ফরহাদ হোসেন কম্পিউটার প্রতিকে ৭৩২ ভোট পান।
নির্বাচনকে সুষ্ঠ রাখতে ৯জন নির্বাহী মেজিট্রেট ১জন জুডিশিলায় ম্যাজিট্রেট, ৪ প্লাটুন বিজিবি, দুই প্লাটুন র্যাব এবং বিপুল সংখ্যক বিজিবি মোতায়ন করা হয়। এর আগে ২১টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ১২টি ভোট কেন্দ্র ঝুকি পূর্ণ ঘোষণা করা হয়। তবে কোন কেন্দ্রেই কোন ধরনের অপৃতিকর ঘটনা ঘটেনি। নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশ্রাফুল আলম রিটানিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেন।