নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকার দোহার উপজেলার নারিশা বাজারে সরকারি হালট দখল করে বাণিজ্যিক ভবন ও দোকানপাট নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বারবার নিষেধাজ্ঞার পরেও স্থাপনা সরিয়ে নেয়নি দখলকারীরা এমনটি অভিযোগ করেন বাজারের অধিকাংশ ব্যবসায়ীরা। এদিকে হালটের বেশ কিছু অংশ দখল করে বাজারের প্রধান মোড়ে মোবারক মার্কেট এর ২য় তলা ভবন এর কাজ শুরু করা হয়েছে। এমন ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাজারের ব্যবসায়ীরা। তারা জানান এই বিল্ডিংটির কারণে প্রতিদিন যানজট লেগেই থাকে, যার দরুন চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় যানবাহন চালকসহ পথচারীদের। দোহার উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, নারিশা ইউনিয়নের সাতভিটা মৌজায় আর,এস ২৬৩১ নং দাগে ৩৬ শতাংশ সরকারি হালটের জমি রয়েছে। যার অধিকাংশ রয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালীদের দখলে। কেই গড়ে তুলেছেন স্থাপনা, অনেকে আবার তুলেছেন দোকানপাট।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নারিশা বাজারের আঞ্চলিক সড়ক সংলগ্ন মোবারক মার্কেটে সম্মুখে চারটি পিলারে বেষ্টিত বারান্দা রয়েছে। স্থানীয়রা জানান তত্বাবধায়ক সরকারের আমলে রাস্তার পাশে অবৈধ স্থাপনা ভেঙ্গে দিতে সারাদেশে অভিযান পরিচালনা করা হয়। ততকালীন সময়ে নারিশা বাজারে মোবারক মার্কেট এর বর্ধিত আংশটি ভেঙ্গে ফেলতে নির্দেশ দেয়া হয়। পরবর্তীতে আঞ্চলিক সড়কের উন্নয়ন কাজ এর সময় রাস্তা প্রশস্ত করার জন্য কাজ চলাকালীন সময়েও সড়ক ও জনপদের কর্মকর্তারা বিল্ডিং এর বর্ধিত অংশ ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ দিলেও সরকারি এই আদেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখায় মার্কেট মালিকরা।
সর্বশেষ দোহার উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মো.আবু বকর সিদ্দিক ঐ স্থানে সরকরি জমি পরিমাপ করে লাল চিহ্ন দিয়ে আসেন। সব নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিল্ডিংটির ২য় তলা ভবনের কাজ শুরু করেন মার্কেট কতৃপক্ষ। জানা যায় বাজার কমিটির সভাপতি শেখ শাহিন নিজেই তদারকি করছেন ভবন নির্মাণের কাজের। এত নিষেধাজ্ঞার পরেও কিভাবে বিল্ডিং এর ২য় তলার কাজ শুরু হয় এই প্রশ্ন সবার মুখে মুখে। এছাড়া দখলকৃত সরকারি হালটটিতে বিগত সময়ে একটি পোষ্ট অফিস ছিলো সেই স্থানটিও দখল হয়ে গেছে বলে জানান স্থানীয়রা। খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, মোবারক মার্কেট এর মালিক মো. মোবারক হোসেন মারা যাওয়ার পর তার আত্মীয় মো. আক্তার হোসেন এই জমিটি দেখাশোনা করেন।
দখলের বিষয়ে বাজার কমিটির সাবেক সভাপতি ওহাব মোল্লা বলেন, আমার বয়স ৭৭ বছর। আমি নিজ চোখে দেখেছি এই বিল্ডিংটির অধিকাংশ জায়গাটিতে সরকারি হালট ছিলো। এর আগে সরকারি লোকদের বার বার বলার পরেও কোন প্রকার কাজ হয়নি। বাজারে দীর্ঘযানজটে প্রতি নিয়ত মানুষ ভোগান্তিতে পরে। এবিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
এব্যাপারে মো. আক্তার হোসেন জানান, এই জমিটি আমার জানা মতে ব্যক্তি মালিকানায় রয়েছে। বিল্ডিং এর মালিক আমার ভগ্নীপতি মারা যাওয়ার পর এখন বাজার কমিটির সভাপতি শেখ শাহিন বিষয়টি দেখাশোনা করেন। তিনি আরও বলেন, যদি সরকারি জমিতে বিল্ডিং এর কোন অংশ পরে থাকে সেই অংশ ভেঙ্গে ফেলা হবে।
এবিষয়ে নারিশা বাজার কমিটির সভাপতি শেখ শাহিনের মুঠোফোনে জানার চেষ্টা করলে এবিষয়ে পরে কথা বলবেন বলে প্রতিবেদককে জানান।
দখলের বিষয়ে দোহার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র জানান, সরকারি হালট কেউ দখল করতে পারবে না। যদি কেউ এমন ঘটনার সাথে জরিত থাকেন তাদের বিরুদ্ধে খব দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।