কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি : কেরানীগঞ্জের কালিগঞ্জে নূর সুপার মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু । তিনি সোমবার বিকেলে পুড়ে যাওয়া নূর সুপার মার্কেট এলাকা পরিদর্শন শেষে ক্ষতিগ্রস্ত গামের্ন্টস দোকান মালিকদের সহানুভুতি জানান।
এসময় প্রতিমন্ত্রীর সাথে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন কেরানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক শাহীন আহমেদ, যুগ্ম আহ্বায়ক ম.ই মামুন, শুভাঢ্যা ইউপি চেয়ারম্যান হাজী মো. ইকবাল হোসেন, আগানগর ইউপি চেয়ারম্যান হাজী মো. জাহাঙ্গীর শাহ খুশী, জিনজিরা ইউপি চেয়ারম্যান হাজী সাকুর হোসেন সাকু, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা যুবলীগের সভাপতি মাহমুদ আলম, আগানগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি মীর আসাদ হোসেন টিটু, শুভাঢ্যা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি হাজী মো. বাসের, কেরানীগঞ্জ গার্মেণ্টস ব্যবসায়ী ও দোকান মালিক সমবায় সমিতির সভাপতি মো. স্বাধীন শেখ, সাধারণ সম্পাদক মুসলিম ঢালী, সমিতির সাবেক সভাপতি আব্দুল আজিজ শেখ প্রমুখ।
নূর সুপার মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে প্রায় শতাধিক দোকান ভস্মীভূত হয়েছে। এতে প্রায় ২০কোটি টাকার ক্ষয় ক্ষতির কথা জানানো হয়েছে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে। রোববার দিবাগত রাত আনুমানিক ১১টার দিকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। মার্কেটটি তৈরী পোশাকের মার্কেট হওয়ায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তবে ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিটের প্রচেষ্টায় রাত ১২টা ৪০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন ফায়ারসার্ভিস কর্তৃপক্ষ। খবর পেয়ে সোমবার বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ী ও তাদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন স্থানীয় সাংসদ ।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, নূর সুপার মার্কেটটি টিন শেডের। এ মার্কেটে ৬ শতাধিক দোকান রয়েছে। রাত ৮টার মধ্যে তাদের মার্কেট বন্ধ করে দেয়া হয়। কিন্তু কিভাবে তাদের এ ধরনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটল তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে বিষয়টি তদন্ত করে দেখার কথা জানিয়েছেন কেরানীগঞ্জ গার্মেণ্টস ব্যবসায়ী ও দোকান মালিক সমবায় সমিতি কর্তৃপক্ষ।
কেরানীগঞ্জ গার্মেন্টস ব্যবসায়ী ও দোকান মালিক সমবায় সমিতির সভাপতি স্বাধীন শেখ জানান, করোনার ধকল সামাল দিতে মাত্র নব উদ্যমে দোকান খুলে নতুন করে পুঁজি সংগ্রহ করে ব্যবসায়ীরা আবার ব্যবসা শুরু করেছিল মাত্র। এরই মধ্যে ভয়াবহ আগুনে তাদের সবকিছু কেড়ে নিল। আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে তাদের পাশে দাড়ানোর চেষ্টা করছি।
কেরানীগঞ্জ গার্মেন্ট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুসলিম ঢালী বলেন, মার্কেটটিতে প্যান্ট, জামা, পাঞ্জাবি, গেঞ্জিসহ তৈরি পোশাকের শত শত দোকান রয়েছে। আগুনে বেশিরভাগ দোকান পুড়ে গেছে। করোনার কারণে এখানকার বেশিরভাগ ব্যবসায়ী চরম লোকসানের মধ্যে আছেন। এ অবস্থায় এ আগুন তাদের পথে বসিয়ে দিয়েছে।
নূর সুপার মার্কেটের মালিক ব্যারিস্টার শেখ ইসতিয়াক আহমেদ নিপু জানান, রোববার রাত ১১ টার দিকে আগুন লাগার খবর শুনতে পাই। অনেক দোকান আগুনে পুরে গেছে। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে প্রায় দুই শতাধিক দোকানদার। আমি তাদের প্রতি সহানুভুতি জানাচ্ছি। ক্ষতিগ্রস্থ দোকান মালিকদের আমার সাধ্যমত সাহায্য করবো। আমি এলাকাবাসী সবাইকে বিপদের সময় এগিয়ে আসার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
মার্কেটের গলি অনেক সরু থাকায় অগ্নিনির্বাপক কর্মীদের বেশ বেগ পেতে হয়েছে। এমন অভিযোগ এনে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন এন্ড মেইনটেনেন্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিল্লুর রহমান বলেন, আগুন লাগার খবর শুনে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। তবে মার্কেটে নিজস্ব কোনো অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকায় প্রাথমিকভাবে স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলেও তাতে ব্যর্থ হয়। ফায়ার সার্ভিস এর পক্ষ থেকে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত শেষে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।