মুসলিম উম্মাহর ধর্মীয় চেতনায় উজ্জীবিত হওয়ার মাস ও দিন ‘মহররম ও আশুরা’। মাসটি হিজরি বছরের প্রথম মাস আর দিনটি প্রথম মাসের দশম দিন। যা আশুরা নামে উদযাপিত হয়। এ দিনেই বনি ইসরাইল সম্প্রদায় ফেরাউনের অত্যাচার ও আক্রমণ থেকে মুক্তি পায়। আবার কারবালার ঐতিহাসিক হৃদয় বিদারক ঘটনাও সংঘটিত হয় এ দিনে।
যুগে যুগে নবী-রাসুলগণ আশুরার রোজা পালন করে আসছেন। এমনকি রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার আগে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও আশুরার রোজা বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে পালন করতেন। আশুরা মুসলিম উম্মাহর জীবনে ধর্মীয় চেতনায় উজ্জীবিত হওয়ার দিন।
মহররম মাসের সঙ্গে অনেক ঐতিহাসিক ঘটনা যুক্ত থাকায় নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই মাসে নফল ইবাদত-বন্দেগিতে অতিবাহিত করতেন। রমজানে রোজা ফরজ হওয়ার পরও তিনি আশুরায় নফল রোজা রাখতেন। বিশেষ দোয়া করতেন। এমনকি তার উম্মতকে আশুরায় রোজা পালনের নির্দেশ দিয়েছেন।
এ মাসের বিশেষ মর্যাদার কারণেই আল্লাহ তাআলা নিজে এ মাসের নামকরণ করেন ‘মহররম’। আরবরা এ মাসকে ‘সফরুল আউয়াল’ তথা প্রথম সফর নামকরণ করে নিজেদের ইচ্ছা মতো যুদ্ধ-বিগ্রহসহ বিভিন্ন কাজকে হালাল ও হারাম করে নিতো। অবশেষে আল্লাহ তাআলা আরবের লোকদের এ অবস্থাকে নিষিদ্ধ করে এ মাসের ইসলামি নামকরণ করেন ‘শাহরুল্লাহিল মুহাররাম’ তথা মহররম আল্লাহর মাস।
হিজরি বছরের প্রথম মাস মহররমের ১০ তারিখ মুসলিম বিশ্বের কাছে গভীর শোক ও বেদনার দিনও বটে। কেননা এ দিনে ইসলামি খেলাফত পুনরুদ্ধারে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রাণপ্রিয় দৌহিত্র হজরত ইমাম হুসাইন ইবনে আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু তৎকালীন শাসক ইয়াজিদ ও তার বাহিনীর অন্যায় ও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ করায় সঙ্গী-সাথীসহ তার পরিবারের প্রায় ৭০ জন নির্মমভাবে শাহাদাতের শিকার হন।
আশুরার এ ঘটনায় ইসলামের জন্য ধর্মীয় চেতনায় উজ্জীবিত হয় মুমিন মুসলমান। যেভাবে ইসলামের জন্য জীবনের শেষ রক্তবিন্দু থাকা পর্যন্ত লড়াই করার অনুপ্রেরণার দেখিয়ে গেছেন হজরত ইমাম হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু। পরিবার-পরিজন ও দলবলসহ তার শাহাদাতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ইসলাম। যে কারণে আশুরা মুসলিম উম্মাহর উজ্জীবিত হওয়া ও অনুপ্রেরণা পাওয়ার বিশেষ দিন।