Dhaka , Monday, 16 June 2025
ব্রেকিং নিউজ :
দোহারে বাসায় পৌঁছে দেয়ার কথা বলে ধর্ষণ,প্রধান আসামি মনি র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার সিংগাইরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে গৃহবধূ আত্মহত্যা দোহারে ঈদ পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় এক কলা গাছে ১৪ মোচা, জনতার ভিড় নোয়াখালীতে নদী ভাঙ্গন রোধে ক্রসডেম নির্মাণ ও ব্লক স্থাপনের দাবিতে জামায়াতের পদযাত্রা দোহারে শিক্ষার্থী ও অসহায়দের মাঝে শিবিরের কোরবানির মাংস বিতরণ দোহার প্রেসক্লাবের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো পশু কোরবানি নোয়াখালীতে পুকুরে ডুবে ভাই-বোনের মৃত্যু সিরাজদিখানে ৮ম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণমামলা তুলে নিতে ভুক্তভোগী পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকি কেরানীগঞ্জ প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হলেন শেখ মো. শামীম উদ্দিন

শিক্ষার ক্ষতি কীভাবে পূরণ হবে ?

  • Reporter Name
  • Update Time : 07:09:53 am, Friday, 13 August 2021
  • 207 Time View

ডেস্ক রিপেরার্ট : করোনার ভয়াল থাবায় আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা আজ লন্ডভন্ড। সাড়ে চার কোটি শিক্ষার্থী ঘরবন্দি এবং বিপাকে পড়েছেন ৫০ লাখ শিক্ষক।

বেসরকারি শিক্ষকদের জীবনে নেমে এসেছে অন্ধকার। হয়তো আমরা সেভাবে খোঁজও রাখি না তাদের। দেশের ইতিহাসে প্রথমবার পরীক্ষা ছাড়াই অটোপাশ দেওয়া হয়েছে এইচএসসি শিক্ষার্থীদের। এসব শিক্ষার্থীর এতদিনে প্রথমবর্ষে থাকার কথা ছিল। অথচ তাদের এখন ভর্তি পরীক্ষাই হয়নি।

গত ২৮ জুলাই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স প্রথমবর্ষের ভর্তির আবেদন শুরু হয়েছে। কিন্তু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এছাড়া গত বছর এসএসসি পাশ করা শিক্ষার্থীরা একদিনও ক্লাসে বসতে পারেনি।

এতে একদিকে যেমন আমাদের শিক্ষা খাতের ক্ষতি হচ্ছে, অন্যদিকে দেশের ওপরেও পড়ছে এর প্রভাব। কারণ একটি দেশ তখনই এগিয়ে যায় যখন সেদেশের শিক্ষার্থীরা সঠিকভাবে শিক্ষা পায়। আজ আমাদের দেশের শিক্ষার বেহাল দশা দেখে ভয় হয়। এ প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা কতদিনে তাদের শিক্ষাজীবন শেষ করতে পারবে সে প্রশ্নও থেকে যায়।

আমরা হয়তো এখনো বুঝতে পারছি না শিক্ষার ওপর করোনার আঘাতটা কত বড়। বিশেষজ্ঞদের মতে, শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার আশঙ্কা প্রবল। এছাড়া করোনায় বেড়েছে বাল্যবিয়ে। শিক্ষার্থীরা ঘরে বন্দি হয়ে থাকতে থাকতে নানা মানসিক সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এসব নিয়ে অভিভাবক মহলও চিন্তিত। করোনার কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে সব স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। একজন শিক্ষার্থীর জীবন থেকে প্রায় দেড় বছর কেড়ে নেওয়া কতটা কষ্টের ও ক্ষতির সেটা হয়তো এখনো সেভাবে আমরা উপলব্ধি করছি না। কেউ হয়তো বলবেন অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার বিষয়টি। সরকার সংসদ টিলিভিশনে, বেতারে এবং বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনলাইনে ক্লাস করিয়েছে। কিন্তু আদৌ কি এটা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার ধাক্কা সামলাতে পেরেছে?

সব শিক্ষার্থী কি অনলাইন ক্লাসের সুবিধা পেয়েছে? কয়েকটি বেসরকারি সংস্থার জরিপে বলা হয়েছে, মাত্র ৩১ শতাংশ শিক্ষার্থী অনলাইন বা বেতার-টেলিভিশনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে পাঠের আওতায় এসেছে।

যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে, তাদের অবস্থা সবচেয়ে শোচনীয়। একদিকে পরিবারের হাল ধরার তাগিদ, অন্যদিকে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করার চাপ।

কিন্তু এর কোনোটাই তারা পারছে না। সবচেয়ে বড় কষ্টের বিষয়, বয়স থেমে থাকছে না। বয়স বেড়ে যাওয়া, সেশনজট, করোনা-এসবের বেড়াজালে আটকে কত তরুণের শিক্ষা ও কর্মজীবন দুটোই শেষ হয়ে যাচ্ছে, সেটা হয়তো আমাদের জানা নেই। কত স্বপ্ন মাটির নিচে চাপা পড়ে যাচ্ছে সে খবরও হয়তো আমরা জানি না।

এ অবস্থায় সরকারের কাছে আমাদের চাওয়া হলো, চাকরির পরীক্ষার আবেদন করার বয়স বাড়ানো হোক। নয়তো একজন শিক্ষার্থী তার শিক্ষাজীবন শেষ করে কর্মজীবনে যাওয়ার আগেই বয়সের বেড়াজালে আটকে যাবে।

পরিশেষে বলতে চাই, করোনার এই ভয়াল থাবার ওপর আমাদের কারও হাত নেই। তবে এর জন্য শিক্ষা খাতের এমন অবস্থা মেনে নেওয়া যায় না। শিক্ষাজীবনে সব শিক্ষার্থীকে ফিরিয়ে আনতে অতি শিগগির করোনার ভ্যাকসিন সব শিক্ষার্থীর ওপর প্রয়োগ করতে হবে। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের এই দেড়-দুই বছরের ক্ষতি কীভাবে পুষিয়ে দেওয়া যায়, সেটার বিকল্প চিন্তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে করতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী যথেষ্ট শিক্ষাবান্ধব ও সচেতন মানুষ।

তিনি শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্যের বিষয়টিও গুরুত্বসহকারে দেখেন। তাই শিক্ষামন্ত্রীর প্রতি আবেদন, আমাদের হারিয়ে যাওয়া বছরগুলো যেন বিকল্প কোনোভাবে পুষিয়ে দেওয়া যায়, সে বিষয়টি ভেবে দেখবেন। সেই সঙ্গে এসব শিক্ষার্থীর কর্মসংস্থানের বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে সরকারকে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

দোহারে বাসায় পৌঁছে দেয়ার কথা বলে ধর্ষণ,প্রধান আসামি মনি র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

শিক্ষার ক্ষতি কীভাবে পূরণ হবে ?

Update Time : 07:09:53 am, Friday, 13 August 2021

ডেস্ক রিপেরার্ট : করোনার ভয়াল থাবায় আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা আজ লন্ডভন্ড। সাড়ে চার কোটি শিক্ষার্থী ঘরবন্দি এবং বিপাকে পড়েছেন ৫০ লাখ শিক্ষক।

বেসরকারি শিক্ষকদের জীবনে নেমে এসেছে অন্ধকার। হয়তো আমরা সেভাবে খোঁজও রাখি না তাদের। দেশের ইতিহাসে প্রথমবার পরীক্ষা ছাড়াই অটোপাশ দেওয়া হয়েছে এইচএসসি শিক্ষার্থীদের। এসব শিক্ষার্থীর এতদিনে প্রথমবর্ষে থাকার কথা ছিল। অথচ তাদের এখন ভর্তি পরীক্ষাই হয়নি।

গত ২৮ জুলাই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স প্রথমবর্ষের ভর্তির আবেদন শুরু হয়েছে। কিন্তু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এছাড়া গত বছর এসএসসি পাশ করা শিক্ষার্থীরা একদিনও ক্লাসে বসতে পারেনি।

এতে একদিকে যেমন আমাদের শিক্ষা খাতের ক্ষতি হচ্ছে, অন্যদিকে দেশের ওপরেও পড়ছে এর প্রভাব। কারণ একটি দেশ তখনই এগিয়ে যায় যখন সেদেশের শিক্ষার্থীরা সঠিকভাবে শিক্ষা পায়। আজ আমাদের দেশের শিক্ষার বেহাল দশা দেখে ভয় হয়। এ প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা কতদিনে তাদের শিক্ষাজীবন শেষ করতে পারবে সে প্রশ্নও থেকে যায়।

আমরা হয়তো এখনো বুঝতে পারছি না শিক্ষার ওপর করোনার আঘাতটা কত বড়। বিশেষজ্ঞদের মতে, শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার আশঙ্কা প্রবল। এছাড়া করোনায় বেড়েছে বাল্যবিয়ে। শিক্ষার্থীরা ঘরে বন্দি হয়ে থাকতে থাকতে নানা মানসিক সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এসব নিয়ে অভিভাবক মহলও চিন্তিত। করোনার কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে সব স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। একজন শিক্ষার্থীর জীবন থেকে প্রায় দেড় বছর কেড়ে নেওয়া কতটা কষ্টের ও ক্ষতির সেটা হয়তো এখনো সেভাবে আমরা উপলব্ধি করছি না। কেউ হয়তো বলবেন অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার বিষয়টি। সরকার সংসদ টিলিভিশনে, বেতারে এবং বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনলাইনে ক্লাস করিয়েছে। কিন্তু আদৌ কি এটা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার ধাক্কা সামলাতে পেরেছে?

সব শিক্ষার্থী কি অনলাইন ক্লাসের সুবিধা পেয়েছে? কয়েকটি বেসরকারি সংস্থার জরিপে বলা হয়েছে, মাত্র ৩১ শতাংশ শিক্ষার্থী অনলাইন বা বেতার-টেলিভিশনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে পাঠের আওতায় এসেছে।

যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে, তাদের অবস্থা সবচেয়ে শোচনীয়। একদিকে পরিবারের হাল ধরার তাগিদ, অন্যদিকে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করার চাপ।

কিন্তু এর কোনোটাই তারা পারছে না। সবচেয়ে বড় কষ্টের বিষয়, বয়স থেমে থাকছে না। বয়স বেড়ে যাওয়া, সেশনজট, করোনা-এসবের বেড়াজালে আটকে কত তরুণের শিক্ষা ও কর্মজীবন দুটোই শেষ হয়ে যাচ্ছে, সেটা হয়তো আমাদের জানা নেই। কত স্বপ্ন মাটির নিচে চাপা পড়ে যাচ্ছে সে খবরও হয়তো আমরা জানি না।

এ অবস্থায় সরকারের কাছে আমাদের চাওয়া হলো, চাকরির পরীক্ষার আবেদন করার বয়স বাড়ানো হোক। নয়তো একজন শিক্ষার্থী তার শিক্ষাজীবন শেষ করে কর্মজীবনে যাওয়ার আগেই বয়সের বেড়াজালে আটকে যাবে।

পরিশেষে বলতে চাই, করোনার এই ভয়াল থাবার ওপর আমাদের কারও হাত নেই। তবে এর জন্য শিক্ষা খাতের এমন অবস্থা মেনে নেওয়া যায় না। শিক্ষাজীবনে সব শিক্ষার্থীকে ফিরিয়ে আনতে অতি শিগগির করোনার ভ্যাকসিন সব শিক্ষার্থীর ওপর প্রয়োগ করতে হবে। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের এই দেড়-দুই বছরের ক্ষতি কীভাবে পুষিয়ে দেওয়া যায়, সেটার বিকল্প চিন্তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে করতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী যথেষ্ট শিক্ষাবান্ধব ও সচেতন মানুষ।

তিনি শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্যের বিষয়টিও গুরুত্বসহকারে দেখেন। তাই শিক্ষামন্ত্রীর প্রতি আবেদন, আমাদের হারিয়ে যাওয়া বছরগুলো যেন বিকল্প কোনোভাবে পুষিয়ে দেওয়া যায়, সে বিষয়টি ভেবে দেখবেন। সেই সঙ্গে এসব শিক্ষার্থীর কর্মসংস্থানের বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে সরকারকে।