নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী ১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণা দিয়েছেন সরকার। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে চলছে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম। কিন্তু বিদ্যালয় ফটকে হাঁটু পানি ও ওয়াস ব্লক তলিয়ে থাকায় অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার ৯৮নং দত্তখন্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাস শুরুর।
বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা জানান, ১৯৭৪ সালে ৬৮ শতাংশ জমিতে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। ৮২ শতাংশের একটি খেলার মাঠও রয়েছে। বর্তমান বিদ্যালয়ে প্রায় সাড়ে ৩২৯ শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। বিদ্যালয়ের দুটি ভবন রয়েছে। এতে প্রাক-প্রাথমিকসহ ৫টি শ্রেণি কক্ষ। একটি শিক্ষক মিলনায়তন ও একটি স্টোর রুম রয়েছে। শুস্ক মৌসুমেও বিদ্যালয়ের বারান্দা থেকে নামলেই পুকুর। শিক্ষার্থীদের হাটাচলার জায়গাও নেই।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর অভিভাবক ছবদের আলী জানান, মেয়ে ৪র্থ ও ছেলে প্রথম শ্রেণিতে এ স্কুলে পড়ে। প্রায় সারা বছরই স্কুলের সামনে পানি থাকে। স্কুল খোলাকালীন বই ভিজিয়েও বাড়ি ফিরেছে মেয়ে একদিন। যে কোন সময়ে অঘটন ঘটতে পারে। আমি এ অবস্থায় কিভাবে ছেলে-মেয়েকে স্কুলে পাঠাতে পারি না। সন্তান আপনার হলেও কি স্কুলে পাঠাতেন?
আলেক চাঁন জানান, ছেলের ঘরের নাতি ও ভাতিজা এই স্কুলে পড়ে। এই অবস্থায় কিভাবে স্কুলে পাঠাতে বলি। স্থানীয় বাসিন্দা জরিপ মৃধা জানান, গত ৪/৫ বছর যাবত স্কুলের সামনে পানি জমছে। কতো জায়গায় গিয়ে মাটি ভরাটের অনুরোধ করেছি। কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেননি।
স্থানীয় বাসিন্দা শেখ মারফত আলী জানান, আশপাশে কোন স্কুল নেই। আমার পরিবারের পৌনে তিন শতাংশ জমি ছিল। তাও স্কুলের কাছে বিক্রি করেছি। তাও যদি এলাকার ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া শিখতে পারে। এখন দেখি জটিলতা দেখা দিয়েছে, জেনে খুব খারাপ লাগছে।
বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় বিদ্যালয় মাঠে পানিতে নেমে এভাবে প্রতিবাদ জানান, স্থানীয় বাসিন্দা পান্নু মাদবর, শেখ সিরাজ, শাকিল মৃধা সহ অনেকে।
বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি রাজু আহমেদ জানান, আমরা ১২ সেপ্টেম্বর স্কুল খুলতে পারছি না। বাচ্চাদের জীবন বিপন্ন করে স্কুল খোলা সম্ভব নয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সায়েদুর রহমান জানান, স্কুলের ওয়াস ব্লকটি পানিতে তলিয়ে আছে। বিদ্যালয় মাঠে কোথাও ৩/৮ ফুট, কোথাও ৬/৭ ফুট গভীরতার পানি। স্কুল চালানোর কোন উপায় দেখছি না।
শোল্লা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নজীর আহম্মদ বলেন, দত্তখন্ড শোল্লা ইউনিয়নের দুর্গম এলাকা। অবহেলিত এ অঞ্চলের শিক্ষা ব্যবস্থাও অবহেলিত। কালীগঙ্গায় বিচ্ছিন্ন জনপদটির শিক্ষার প্রসারে প্রয়োজন উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এ এলাকার শিক্ষার উন্নয়নে শিক্ষা অধিদপ্তরের কার্যক্রম আরো গতিশীল করা জরুরি। যাতে সরকারের শিক্ষানীতির বাস্তবায়িত হয়।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জেসমিন আহমেদ বলেন, বিষয়টি জেনেছি। এবিষয়ে অতিদ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।