মো. নাজমুল হোসেন. দোহার-নবাবগঞ্জ(ঢাকা) ১৯৭১ সালে হাজার বছরে শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছি। এই দেশ স্বাধীন হয়েছে বিধায় আমরা মন প্রাণ ভরে দেশের যে কোন উৎসব উদযাপন করতে পারছি। শুক্রবার বিকালে মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার খাহ্রা আদর্শ ডিগ্রী কলেজ মাঠে আলম খান-তহুরুন্নেসা ফাউন্ডেশন আয়োজিত দুই দিন ব্যাপী পৌষ মেলার শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউনিক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বীরমুক্তিযোদ্ধা মোহা. নূর আলী এসব কথা বলেন।
মূল অনুষ্ঠান শুরুর আগে নূর আলী আমন্ত্রিত অতিথিদের নিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। পরে শান্তির প্রতিক পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে মেলার শুভ উদ্বোধন করেন।
বীরমুক্তিযোদ্ধা নূর আলী বলেন, আপনারা দেখেছেন কিছুক্ষণ আগে আমরা জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছি। এসময় আমরা সবাই মিলে আমাদের জাতীয় সংগীত গেয়েছি। এই জাতীয় সংগীত রচিতা বিশ্ব কবি রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর। এই জাতীয় সংগীত শুরুতে কবিতা ছিলো। পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে জাতীয় সংগীত হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
দেশ বরেণ্য শিল্পপতি বলেন, আজ বঙ্গবন্ধু বেচে নেই। তবে তার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিন রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। শেখ হাসির নেতৃত্বে বাংলাদেশে যে সকল উন্নয়ন হয়েছে তা অনেকেই স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি।
দেশের সূর্য সন্তান নূর আলী বলেন, আজ যদি এই দেশ স্বাধীন না হতো তাহলে, হয়তো আমরা বাংলার এ সস্কৃতি ও ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলতাম। পাশেই খাহ্রা আদর্শ কলেজ শিক্ষার্থীরা বাড়ির গরম ভাত খেয়ে কলেজে এসে ক্লাশ করে আবার ক্লাশ শেষে বাড়িতে গিয়ে গরম ভাত খায় এটাও দেশ স্বাধীনের একটি অবদান।
খাহ্রা আদর্শ ডিগ্রী কলেজের সভাপতি নূর আলী বলেন, এই মাঠটি আদর্শ কলেজের সম্পত্তি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর যারা এই মাঠের দায়িত্বে ছিলেন তারা মাঠটি খাহ্রা কলেজকে লিখে দেন। আমরা খাহ্রা সবুজ সংঘকে মাঠটি দেখভালের জন্য দায়িত্ব দিয়েছি। খুব তাড়াতাড়ি কলেজ গভর্নিংবডি ও ক্লাবের কমিটি বসে এই মাঠটি কিভাবে সংস্কার করা যায় এ উদ্যোগ নিতে হবে।
সংস্কৃতিমনা নূর আলী তার বাল্য কালের স্মৃতি স্বরণ করে বলেন, আমার গ্রামের বাড়ি নবাবগঞ্জের কামার খোলায়। এই শ্রীনগর উপজেলার খাহ্রা আমার নানার বাড়ি। গ্রামের বেশির ভাগ সময়ই আমি আমার নানা বাড়িতে কাটিয়েছি। রাত জেগে পৌষ মাসে গ্রামে গ্রামে মেলায় ঘুরেছি, আম কাঠালের দিনে আম খেয়েছি আজও সেই দিন গুলো বেশ মনে পড়ে। আমার বাবা যখন কলকাতায় চাকরি করতেন তখন আমাদের ইছামতী নদীতে লঞ্চ চলতো। আমি আমার পিতাকে রাত তিনটার দিকে এই এলাকায় যে লঞ্চ আসতো সেই লঞ্চে তুলে দিতাম। তিনি গোয়ালন্দ গিয়ে নামতেন। আজ সেই ইছামতী নদীর নাব্বতা নেই। আমি অনেক খুশি হয়েছি শুনলাম সেলিম খানের নেতৃত্বে সেই ইছামতি নদী সংস্কার হচ্ছে। আসলে আমাদের এই সম্পদ আমাদেরই রক্ষা করতে হবে।
সমাজ সেবা অধিদপ্তরের যুগ্ম সচিব সেলিম খান তার বক্তব্যে বলেন, আলম খান-তহুরুন্নেছা ফাউন্ডেশনটি আমরা আমাদের বাবা মায়ের নামে করেছি। এটি একটি জনকল্যাণমূলক সেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান। এই সংগঠনের মূল উদ্যেশ্য সমাজের অসহায় মানুষদের নিয়ে কাজ করা। শুধু তাই নয় এই সংগঠন দেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষায় কাজ করছে এবং কাজ করে যাবে। প্রথমবার দুইদিন ব্যাপী পৌষ মেলার আয়োজন করেছি। আগামীতে সাত দিন ব্যাপী আয়োজন করা হবে।
আলম খান তহুরুন্নেসা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, শ্রীনগর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মসিউর রহমান মামুন, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন, পৌষ মেলার আয়োজক কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ও বাড়ৈখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন, মেলার আহবায়ক ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ইকবাল হোসেন। এসময় অন্যদের মধ্যে খাহ্রা আদর্শ ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ আজিজুল ইসলাম, নবাবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এস এম সাইফুল ইসলাম, আগলা ইউপি চেয়ারম্যান শিরিন চৌধুরী, চুড়াইন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাব্বির হোসেন বাদল, সাবেক কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর হোসেন, চুড়াইন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম তিতাস সহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।বক্তব্য শেষে প্রধান অতিথি মোহ. নূর আলী অতিথিদের নিয়ে মেলায় বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করে কেনাকাটা করেন। সন্ধ্যায় মঞ্চ মাতান সাবেক ক্লোজাপ ওয়ান শিল্পী সালমা সহ আরো অনেকে।