স্টাফ রিপোর্টারঃ আজ ১ যুগে পূর্তি হলো নৌকা বাইচ ঐতিহ্য রক্ষা জাতীয় কমিটির। ২০১০ সালের ২০শে জুলাই এই সংগঠনের যাত্রা শুরু হয়। এ উপলক্ষ্যে আগামী ভাদ্র মাসে আয়োজন করা হবে যুগপূর্তির নৌকাবাইচ। সংগঠনের সভাপতি মাসুদ রানা ও সাধারণ সম্পাদক রাশিম মোল্লা সংগঠনের সর্বস্তরের সদস্য, শুভাকাঙ্খী, নৌকা বাইচ মালিক, আয়োজক, দর্শকদের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তারা বলেন, যুগ পূর্তির নৌকা বাইচে এবার দর্শকরা দুটি নতুন ঘাসী নৌকা দেখতে পাবেন। এছাড়া সিরাজগঞ্জের পানসী নৌকা করম আলী এক্সপ্রেস, মায়ের দোয়ার নৈপুণ্য নৌকা বাইচ দেখতে পাবেন।
সূত্র জানায়, এ সংগঠনের সহসভাপতি মাহবুব জামান কিছুদিন আগে ১২৭ ফুট লম্বা বাইচের নৌকা ক্রয় করেছেন। এছাড়া সংগঠনের আরেক সদস্য নিবেশ চকিদার ইতিমধ্যে বিশাল বড় ঘাসী নৌকা বানিয়েছেন । এছাড়া পুরোনো নৌকাগুলোতেও আঁকছেন বিভিন্ন চিত্রকর্ম। সংগঠনের সভাপতি মাসুদ মোল্লা বলেন, ২০১০ সালে নৌকাবাইচ ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাশিম মোল্লার পরামর্শে এ সংগঠন গঠন করা হয়। প্রায় একশ বছর আগ থেকে ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ ও মানিকগঞ্জে ইছামতি, কালিগঙ্গা ও ধলেশ্বরী নদীর বিভন্ন পয়েন্টে মাসব্যাপী নৌকাবাইচ হতো। ২০০১ সালের দিকে কাশিয়াখালী ইছামতী নদীর মুখে বেড়িবাঁধ দেয়া হয়। নদীতে পানির সংকট দেখা দেয়। চর পড়ে যায় নদীতে। নদীর মতো ভাটা পড়ে নৌকাবাইচেরও।
এ কারণে এলাকার নৌকাগুলোর বিলুপ্ত ঘটে। তিনি আরো জানান, গত ৩১ মার্চ মুজিব জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ রোইং ফেডারেশন হাতিরঝিলে আয়োজন করে বঙ্গবন্ধু কাপ আন্তর্জাতিক নৌকাবাইচ। বাইচে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় দুটি ইভেন্ট ছিল। জাতীয় ইভেন্টে অংশ নেয় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাশিম মোল্লার নবাবগঞ্জ রোইং ক্লাব। আন্তর্জাতিক ইভেন্টেও বাংলাদেশ টিমের সাদা দলের নেতৃত্ব দেন তিনি। দুই ইভেন্টেই জয় লাভ করে। সূত্র জানায়, এ সংগঠনের কার্যক্রম এখন রাজধানী ঢাকা, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ জেলায়।
এসব জেলার বিভিন্ন নদীতে নৌকাবাইচ ঐতিহ্য রক্ষা কমিটির নেতাদের নৌকা অংশ নেয়। হারানো নৌকাবাইচ ঐতিহ্য ফেরাতে এই সংগঠনের পক্ষ থেকে ২০১৯ সালে রাজধানীর বুড়িগঙ্গায় নৌকাবাইচ আয়োজন করতে ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে আহ্বান জানানো হয়। তখন কাউন্সিলর আহ্বানে সাড়া দিয়ে আয়োজন করেন নৌকাবাইচ। এই বাইচে সংগঠনের ৮ থেকে ১০টি নৌকা অংশগ্রহণ করে। ২০২১ সালে বিআইডব্লিউটিএ আয়োজিত নৌকাবাইচে সহায়তা করে নৌকাবাইচ ঐতিহ্য রক্ষা কমিটি। এতে অংশ নেয় সংগঠনের ৭টি নৌকা। সবশেষ পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিন আয়োজিত নৌকাবাইচে পদ্মা পাড়ি দিয়ে অংশ নিয়েছে সংগঠনের ৬টি নৌকা। নৌকাগুলো হলো- বলধারার ঐতিহ্য, সোনার তরী, হাতনীর রাজ, মামা ভাগ্নে, সোনার বাংলা ও লিটন এক্সপ্রেস।