নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানী ঢাকার পাশ্ববর্তী নবাবগঞ্জ উপজেলার যন্ত্রাইল ইউনিয়নের ছোট গোবিন্দপুর গ্রামের শান্ত পরিবেশ হঠাৎ করে অশান্ত হয়ে উঠেছে সৌদি প্রবাসী রতন হালদারে স্ত্রী শিখা হালদারের মৃত্যু রহস্য নিয়ে। গত শুক্রবার (৯ জুন ২০২৩ইং) শিখার ঝুলন্ত মৃত দেহ উদ্ধার করেন নবাবগঞ্জ থানা পুলিশ। শিখার মৃত্যু নিয়ে চলছে এলাকাতে নানা গুঞ্জন।
স্বজনদের দাবি শিখাকে তার শশুর বাড়ির লোকজন বিভিন্ন সময় নির্যাতন করতো এবং পরিবারে মধ্যে প্রায় ঝগড়া হতো। স্থানীয়রা জানায় এঘটনার পর শিখার শ্বশুর বাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য দিলীপ হালদার শিখার চাচা শ্বশুরের মোবাইল বন্ধ গত চার দিন যাবত। তবে অভিযুক্ত শ্বশুর সুনিল ও চাচা শ্বশুর দিলীপ হালদারের বাড়ীতে রাতে চৌকিদার দিয়ে পাহারা দেওয়ান চেয়ারম্যান। এবিষয় নিয়ে এলাকায় চলছে তুমুল সমালোচনা।
বুধবার সরেজমিনে গিয়ে স্থানীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, শিখার মৃত্যু রহস্য কি, হত্যা না আত্মহত্যা ? এমন নানা প্রশ্নের উত্তর মিলছে না শ্বশুর বাড়ীর লোজনের কাছ থেকে। গ্রামের অধিকাংশ মানুষের দাবি, শিখাকে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন নির্যাতনের পর হত্যা করে ঝুলিয়ে রেখেছে। পরে আত্মহত্যা বলে লাশ পুড়িয়ে ফেলতে চেয়েছিলো।
এদিকে শিখার মৃতু্্যর সংবাদ পেয়ে সৌদি আরব থেকে স্বামী রতন হালদার দেশে ফিরে আসেন। তার স্ত্রীর মৃত্যুর বিষয়ে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে শিখা আমাকে মোবাইলে জানায় বাড়িতে ঝগড়া হয়েছে। আমি তাকে বিভিন্ন ভাবে সান্ত¦না দেই ও শান্ত থাকতে বলি। তখন বাংলাদেশ সময় রাত প্রায় ১২টা বাজে। শুক্রবার জানতে পারি আমার স্ত্রী আর জীবিত নেই। আমার স্ত্রী শিখাকে ‘আমার বাবা ও ছোট ভাই নির্যাতন করে মেরেছে’।
এবিষয়ে স্থানীয় সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ড মেম্বার গীতা হালদার বলেন, শিখার মৃতু্্যর বিষয়ে তার স্বামী রতন হালদার ফোনে তাকে জানায়, শিখাকে রতনের বাবা সুরিল হালদার ও ছোট ভাই নির্যাতন করে মেরেছে।
সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় নিহত শিখার মা শারথী হালদারের সাথে তার দাবি, মেয়ে শিখার শ্বশুর বাড়ির লোকজন তার মেয়েকে মেরে ঝুলিয়ে রেখেছে। তিনি তার মেয়ের হত্যাকারীদের ফাঁসি চান।
স্থানীয় জলিল মাতবর বলেন, শিখার শ্বশুর প্রায়ই ছেলের বউদের মারধর করতো। এঘটনার আগের দিন শিখার শ্বশুর সুনিল হালদার তার দুই ছেলে বউ এর সাথে ঝগড়া করে। তখন ছেলের বউরা আমাকে বিষয়টি জানায় আমি বিষয়টি সমাধানের জন্য সুনিলকে বার বার অনুরোধ করি। কিন্তু সে আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে এবং আমার কথা রাখেনি। এলাকায় বিষয়টি নিয়ে কয়েখদিন ধরেই বেশ কানাঘোষা চলছে
এঘটনায় গত শনিবার বিকালে উত্তেজিত এলাকাবাসী শিখাকে হত্যা করেছে এ অভিযোগ এনে বিচার দাবী করে বিক্ষোভ করে। এঘটনার পর থেকে শিখার শ্বশুর বাড়ীর লোকজন পলাতক রয়েছে। এতে করে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে হত্যা সন্দেহ আরো জোরদার হয়েছে বলে মনে করেনে এলাকাবাসী।
স্ত্রী হত্যার বিচার চেয়ে প্রবাস ফেরত স্বামী রতন হালদার বলেন, হত্যার সাথে জড়িত যেই থাকুক তার শাস্তি চাই। নিহত শিখার তিন বছরের একমাত্র কন্যা সন্তান ঝুমুর কে নিয়ে বাবা রতন এখন দিশেহারা।