দোহার-নবাবগঞ্জ(ঢাকা) প্রতিনিধি; ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার কলাকোপা ইউনিয়নের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত ইছামতী নদীর তীরে জমিদার ব্রজেন রায় ওরফে সুদর্শন রায় কর্তৃক প্রায় দুইশ বছর পূর্বে নির্মিত প্রাসাদ “ব্রজ নিকেতন”। এটি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্পিত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত। নবাবগঞ্জ উপজেলার হযরতপুর মৌজার অর্পিত সম্পত্তি কেস নং ১২৮৩/৬৭ ও ৩৪৭/৮৫ এর আওতাধীন এস এ দাগ ২৯, ২৮ ও ২৭ নং দাগে (০.৭১+.০.৪২+০.৪২= ১.৫৫ একর) ভূমি অর্পিত সম্পত্তি হিসেবে গেজেটভূক্ত রয়েছে।
সূত্র জানায়, সুদীর্ঘ বছর ধরে পেশী শক্তি ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক ও তার সহোদর অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ আবুল হোসেন, আবুল কালাম খন্দকারসহ তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যগণ অবৈধভাবে এই ‘ব্রজ নিকেতন’ দখলে রেখেছেন। শুধু তাই নয় এই ব্রজ নিকেতন দখল করে নাম পাল্টে করা হয় জজ বাড়ি। নবাবগঞ্জে এই ‘ব্রজ নিকেতন’ উদ্ধার একটি যুগান্তকারী ঘটনা। কেননা বেআইনী দখলদারগণ এই ঐতিহাসিক মূল্য সমৃদ্ধ প্রাসাদ ও সংলগ্ন ভূমি গ্রাস করার জন্য জাল দলিল তৈরি করে অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ ট্রাইব্যুনাল মোকদ্দমা ২৩৬৯/১৩ দায়ের করেছে যা বর্তমানে চলমান। জমির সি এস, এস এ রেকর্ডীয় মালিক ও তাদের ওয়ারিশগণ দেশ বিভাগের সময় সবাই ভারত চলে গিয়েছে।জমির মালিক না হয়েও প্রভাব খাটিয়ে বে-আইনী দখলদারগণ এই প্রাসাদ দখলে রেখেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা ও ঢাকা-১ আসনের সাংসদ সদস্য সালমান ফজলুর রহমান, ঢাকা জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. মমিনুর রহমানের সার্বিক নির্দেশনা মোতাবেক গত ৩১ ডিসেম্বর “ব্রজ নিকেতন” কে অবৈধ দখলদার মুক্ত করা হয়। কার্যক্রমে সার্বিক সহযোগিতা করেন ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান পিপিএম (বার)।বর্তমানে পুলিশ প্রহরায় ঐতিহাসিক স্থাপনা ও সম্পত্তি সরকারের দখলে রয়েছে।
উল্লেখ্য নবাবগঞ্জ উপজেলায় দুই হাজার একরের অধিক অর্পিত সম্পত্তি রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) আ. হালিম যোগদানের পর গত বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ৩৫ একর অর্পিত সম্পত্তি বেআইনী দখলদারের থেকে উদ্ধার করে আইন অনুযায়ী লীজ প্রদান করেছেন। এ থেকে সরকারের প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে।
এব্যাপারে মুঠোফোনে নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান বলেন, আমরা সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছি। আপনারা জানেন দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতা ও প্রভাব খাটিয়ে ব্রজ নিকেতন দখলে ছিলো। আমরা দখলদার মুক্ত করেছি। নবাবগঞ্জকে সরকারি জমি দখলমুক্ত করে যত ধরনের চ্যালেঞ্জ নিতে হয় আমরা প্রস্তুত রয়েছি।
ইনশাল্লাহ এই নবাবগঞ্জকে আমরা দখলদার মুক্ত করে ছাড়বো। তিনি আরো বলেন, ইতিমধ্যে আমরা সালমান এফ রহমান এমপিকে ব্রজ নিকেতনকে যাদুঘর ঘোষণার প্রস্তাব দিয়েছি। খুব শিগগিরিই সরকারি ভাবে যাদুঘর করার ঘোষণা আসত্যে পারে।