নিজস্ব প্রতিবেদক : ঈদুল ফিতর ঘনিয়ে আসায় জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। তাই শেষ মুহূর্তে কেনাকাটায় ব্যস্ত ক্রেতা-বিক্রেতারা। কেনাকাটায় মার্কেটে মার্কেটে ছুটছে মানুষ। নতুন পোশাকে ঈদ উদযাপনে কেনাকাটায় বেশ জমে উঠেছে ঢাকার দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলার ঈদ বাজার। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তরুণ-তরুণী, বৃদ্ধ-শিশুসহ নানান বয়সী মানুষের পদচারণায় মুখর উপজেলার বিপণিবিতানগুলো। বিশেষ করে উপজেলার জয়পাড়া ও মেঘুলা বাজারের বিভিন্ন মার্কেটের কাপড়ের দোকানগুলো রোজার শুরু থেকেই ক্রেতাদের আকর্ষণের জন্য নতুন নতুন ডিজাইনের ও নামের কাপড়ে দোকানগুলো সাজিয়েছে নানাভাবে।
ফ্যাশন সচেতন তরুণীদের পোশাকের মধ্যে বরাবরের মতো এবারও পছন্দের শীর্ষে রয়েছে ভারতীয় বিভিন্ন সিরিয়াল বা নাটকের নামের ব্র্যান্ডের তৈরি পোশাক। এবার তালিকায় নতুন যোগ হয়েছে কাঁচাবাদাম, টিকটক, গারারা, সারারাসহ অনেক অনেক পোশাক। আর এসব পোশাকের দিকেই বেশি আকৃষ্ট হচ্ছেন ক্রেতারা। তবে মার্কেটের প্রতিটি স্থানেই পুরুষের তুলনায় নারীদের উপস্থিতি বেশি দেখা গেছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, করোনার কারণে দোকান বন্ধ থাকায় প্রায় আড়াই বছর লোকসান গুনতে হয়েছে। অনেক পুঁজি ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে। তবে এবার করোনার প্রকোপ কম থাকায় বাজারে ক্রেতা সমাগম ঘটেছে আশানুরূপ। এতে তারা আশা করছেন কিছুটা হলেও এবার পুষিয়ে নিতে পারবেন।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ঈদের কেনাকাটাকে সামনে রেখে উপজেলার জয়পাড়া বাজারের ওয়ান ব্যাংক মোড় থেকে পাপেল শপিংমল পর্যন্ত রাস্তায় ইজিবাইক ও রিকশাসহ বড় যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে শপিং করতে আশা ক্রেতারা সহজে কেনাকাটা করতে পারছেন।
অপরদিকে যারা প্রতিদিন অফিস করতে আসেন তারা বলছেন ভিন্ন কথা। গাড়ি আসতে না দেওয়ায় ওয়ান ব্যাংক মোড় থেকে হেটে তাদের অফিসে আসতে হচ্ছে। রোজা রেখে এই প্রচন্ড রোদে হেটে আসতে তাদের পরিশ্রম ও কষ্ট করতে হচ্ছে অনেক।
ঈদের দিনটি নতুন পোশাকে ক্রেতাদের রাঙিয়ে তুলতে উপজেলার জয়পাড়া ও মেঘুলা বাজার ছাড়াও আশেপাশে রয়েছে বেশ কয়েকটি বাজার। সেখানেও ঈদের কেনাকাটায় সরগরম রয়েছে বাজারগুলো। বাজারগুলোর মধ্যে রয়েছে, পালামগঞ্জ বাজার, কার্তিকপুর বাজার, বাংলাবাজার, নারিশা বাজার ও ফুলতলা বাজার। আর এসব বাজারে পছন্দের পোশাক কিনতে মার্কেটের এক দোকান থেকে আরেক দোকানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ক্রেতারা। যে দোকানেই পছন্দ হচ্ছে সেখান থেকেই ক্রেতারা কেনাকাটা সেরে নিচ্ছেন। ঈদ উপলক্ষে কিছুটা দাম বেশি বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা। তবে বিক্রিও হচ্ছে বেশ ভালো।
জুতা, প্রসাধনী ও গয়নার দোকানেও ভিড় দেখা গেছে। পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে তরুণীরা গয়না কিনছেন।
প্রতি বছরের মতো এবারও উপজেলার সবচেয়ে বড় পোশাক মার্কেট জয়পাড়া বাজার। রয়েছে ক্রেতাদের উপচে পরা ভিড়। পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলার বিষয়েও নজরদারি রাখা হয়েছে।
এবিষয়ে দোহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোস্তফা কামাল বলেন, ক্রেতা-বিক্রেতা উভয় পক্ষ রাত পর্যন্ত নির্বিঘ্নে যাতে কেনাবেচা করতে পারে সে জন্য বিভিন্ন বিপণিবিতান ও সড়কের স্থানে স্থানে পুলিশের টহল দল মোতায়েন করা হয়েছে।
অপরদিকে নবাবগঞ্জ উপজেলার বাগমারা, বান্দুরা, বারুয়াখালী ও শিকারীপাড়ার কয়েকটি মার্কেট ঘুরে দেখা যায় ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে বিভিন্ন ফুটপাত ও বিপণিবিতানগুলোতে ততই ভিড় বাড়ছে। শেষ মুহূর্তের কেনাকাটায় ক্রেতারা নিজেদের পছন্দের ঈদের পোশাক কিনতে ছুটছেন এক দোকান থেকে অন্য দোকান।
নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম শেখ বলেন, ঈদকে সামনে রেখে আমরা বিভিন্ন বিপণিবিতান ও সড়কের গুরুতপূর্ণ স্থানগুলোতে পুলিশের টহল দল মোতায়েন করেছি যাতে ক্রেতা-বিক্রেতারা কোনো রকম ভোগান্তি ছাড়াই কেনাবেচা করতে পারেন।