ডেস্ক রিপোর্ট : ড্রোনটির ওজন ১০ কেজি। একটানা উড়তে পারবে ৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত। ড্রোনের সঙ্গে রয়েছে করোনার টিকা রাখার বাক্স। তাই করোনার টিকা সংরক্ষণ ও পরিবহনেও সক্ষম এটি। এমন এক ড্রোনের নকশা করে আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) চার শিক্ষার্থী।এই চার শিক্ষার্থী হলেন কুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের নিলয় নাথ, জাহিদ হাসান, শাহিনুর হাসনাত ও আয়াজ আল আবরার। গত ১৮ এপ্রিল ভারতের উত্তরাখণ্ডে অবস্থিত ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি ‘কগনিজেন্স ২১’ নামে প্রযুক্তিবিষয়ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। এতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), কুয়েট, ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিসহ দেশের ছয়টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। সবাইতে টপকে কুয়েটের চার শিক্ষার্থী দ্বিতীয় পুরস্কার অর্জন করেন। প্রথম হন ভেলোর ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির চার শিক্ষার্থী। তাঁরা চালকবিহীন বিমান তৈরি করেন। বাংলাদেশ ছাড়াও অন্তত ২০টি দেশের শিক্ষার্থীরা প্রতিযোগিতায় অংশ নেন।
কুয়েটের চার শিক্ষার্থীর দলের নাম ছিল ‘অকুতোভয়’। তাঁরা জানালেন, প্রতিযোগিতাটি ছিল দুই রাউন্ডে বিভক্ত। প্রথম রাউন্ডে প্রতিযোগীদের চালকবিহীন উড়োযানের নকশার খসড়া তৈরি করতে বলা হয়। শর্ত ছিল, এসব উড়োযান করোনার টিকা আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে সক্ষম হতে হবে। এরপর খসড়া বাছাই করে ২২টি দলকে দ্বিতীয় রাউন্ডের জন্য নির্বাচন করেন আয়োজকেরা। দ্বিতীয় রাউন্ডে নকশার খুঁটিনাটি বিচারকদের সামনে উপস্থাপন করতে হয়। এরপর সেরা তিনটি দলকে বেছে নেন বিচারকেরা।
দলের প্রধান নিলয় নাথ জানালেন, অকুতোভয়ের নকশা করা ড্রোনটি ৫০ গ্রাম ওজনের ২০০টি টিকার বোতল বহন করতে পারবে। বাক্সের ভেতর তাপমাত্রা থাকবে ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ড্রোন নকশার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়েছে কার্বন ফাইবার। ফলে ড্রোনের ওজন তুলনামূলক কম, কাঠামোও শক্তিশালী। ড্রোনের সঙ্গে লাগানো টিকার বাক্সে থাকবে রেফ্রিজারেশন পদ্ধতি। এতে টিকা নিরাপদ থাকবে।
দলের সদস্যেরা জানালেন, প্রতিযোগিতার ১৫ দিন আগে তাঁরা কাজ শুরু করেন। করোনা পরিস্থিতির কারণে পুরো প্রতিযোগিতাই হয়েছে অনলাইনে। ১৫ দিন পরিশ্রমের পরে তাঁরা ড্রোনটির মডেল দাঁড় করাতে সক্ষম হয়েছেন। এই ড্রোনের সাহায্যে দেশের দুর্গম এলাকায় টিকা পৌঁছে দেওয়া যাবে বলে মনে করে ‘অকুতোভয়’।