কেরানীগঞ্জে টর্চার সেলে নির্মম নির্যাতন চালিয়ে এক যুবককে হত্যার ঘটনায় বহিষ্কৃত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আফতাব উদ্দিন রাব্বিসহ ১১ আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার বিকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন কেরানীগঞ্জ সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন কবির। তিনি বলেন, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের রাসেল হত্যার ঘটনায় ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ বিষয়ে বুধবার পুলিশ সুপার বিস্তারিত জানাবেন।
জানা যায়, থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক রাব্বির নেতৃত্বে ১০/২০ জন মিলে সারারাত নির্যাতন চালিয়ে রাসেলকে হত্যা করা হয়। চাঁদার টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানা গেছে। রাসেলকে নির্যাতনের বেশকিছু ভিডিও ফুটেজ ও ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, রাসেলের পরনে কোনো জামা নাই। মাথার চুল কেচি দিয়ে কেটে দেওয়া হয়েছে। খালি গায়ে থাকা রাসেলকে কয়েকজন টানাহেঁচড়া করছে। মারের চোটে রাসেল রাব্বিকে বলছে, ‘আব্বা আব্বা, রাব্বি আব্বা আমাকে বাঁচান।’
অপর একটি ভিডিওতে দেখা যায়, অচেতন অবস্থায় বসিয়ে রাখা হয়েছে রাসেলকে। একজন তাকে গালাগাল করছে। আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, মেঝেতে নিথর দেহ রাসেলের। নাক দিয়ে রক্ত ঝড়ছে। কেউ একজন সেটা মুছে দিচ্ছেন।
নিহতের স্ত্রী জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে স্বামীকে নির্যাতনের খবর পেয়ে আমরা রাব্বির অফিসে (টর্চার সেল) যাই। সেখানে রাসেল মেঝেতে অচেতন হয়ে পড়েছিল। আমরা তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিতে চাইলে রাব্বি অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে ২০ লাখ টাকা দাবি করে। এরপর আমার মেয়েকে হত্যার হুমকি দিয়ে সেখান থেকে আমাকে তাড়িয়ে দেয়। বুধবার সকালে লাশ বাসায় এনে রেখে যায়। খবর পেয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় নিহত রাসেলের বাবা তোফাজ্জল হাওলাদার বাদী হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় আফতাব উদ্দিন রাব্বিসহ কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেন।