Dhaka , Monday, 16 June 2025
ব্রেকিং নিউজ :
দোহারে বাসায় পৌঁছে দেয়ার কথা বলে ধর্ষণ,প্রধান আসামি মনি র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার সিংগাইরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে গৃহবধূ আত্মহত্যা দোহারে ঈদ পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় এক কলা গাছে ১৪ মোচা, জনতার ভিড় নোয়াখালীতে নদী ভাঙ্গন রোধে ক্রসডেম নির্মাণ ও ব্লক স্থাপনের দাবিতে জামায়াতের পদযাত্রা দোহারে শিক্ষার্থী ও অসহায়দের মাঝে শিবিরের কোরবানির মাংস বিতরণ দোহার প্রেসক্লাবের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো পশু কোরবানি নোয়াখালীতে পুকুরে ডুবে ভাই-বোনের মৃত্যু সিরাজদিখানে ৮ম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণমামলা তুলে নিতে ভুক্তভোগী পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকি কেরানীগঞ্জ প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হলেন শেখ মো. শামীম উদ্দিন

করোনায় ৪০ লাখ মৃত্যুর মাইলফলকে বিশ্ব

  • Reporter Name
  • Update Time : 07:04:13 am, Thursday, 8 July 2021
  • 254 Time View

ছবি- সংগ্রহ

ডেস্ক : পৃথিবী নজিরবিহীন এক মহামারীর কবলে পড়ার পর পেরিয়ে গেছে দেড় বছর; এই সময়ে করোনাভাইরাস কেড়ে নিয়েছে অন্তত ৪০ লাখ মানুষের প্রাণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই দুঃখজনক মাইলফলকে পৌঁছানোর খবর দিয়ে সতর্ক করেছে সেইসব ধনী দেশকে, এশিয়ায় সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির মধ্যেও যারা বিধিনিষেধ শিথিল করার পরিকল্পনা করছে।

জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় এ সঙ্কটের শুরু থেকে হালনাগাদ তথ্য নিয়ে নিয়মিত যে টালি প্রকাশ করে আসছে, বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ২১ মিনিটে সেখানে মৃত্যুর সংখ্যা ৪০ লাখ ৬৪১ জনে পৌঁছায়।

এর মধ্যে এক তৃতীয়াংশ মানুষের মৃত্যু হয়েছে তিন মহাদেশের মাত্র তিনটি দেশে। এই তালিকার শীর্ষে থাকা যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৬ হাজারের বেশি মানুষ, যা বিশ্বের মোট মৃত্যুর ১৫ শতাংশ। ব্রাজিলে ৫ লাখ ২৮ হাজার এবং ভারতে ৪ লাখ ৪ হাজার মানুষের মৃত্যুর তথ্য এসেছে সরকারের খাতায়। 

বিশ্বজুড়ে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পৌঁছেছে সাড়ে ১৮ কোটিতে। এর ৪৪ শতাংশের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে সেই যুক্তরাষ্ট্র, ভারত আর ব্রাজিলে। ৩ কোটি ৩৭ লাখ শনাক্ত রোগী নিয়ে এ তালিকাতেও সবার উপরে যুক্তরাষ্ট্র।

এসব সংখ্যা হিসাব করা হয়েছে সরকারি তথ্যের ভিত্তিতে। বিশ্বের অনেক দেশে এখনও করোনাভাইরাস পরীক্ষার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। ফলে আক্রান্ত ও মৃত্যুর অনেক তথ্যই এ হিসাবের বাইরে থেকে গেছে বলে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের ধারণা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদ্রোস আধানম গ্যাব্রিয়েসুসও বলেছেন, ৪০ লাখ মৃত্যুর এই সংখ্যা বাস্তবতার তুলনায় ‘অনেক কম’। তার ভাষায় বিশ্ব এখন মহামারীর এক বিপজ্জনক মোড়ে পৌঁছেছে।

২০১৯ সালের শেষে নতুন এক করোনাভাইরাসের প্রকোপের কথা বিশ্বকে জানিয়েছিল চীন। সেখানে প্রথম মৃত্যুর খবর এসেছিল ২০২০ সালের ১১ জানুয়ারি, নতুন এক করোনাভাইরাসে প্রথম মৃত্যুর খবর দিয়েছিল চীন। সেই সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়ায় ২৯ সপ্টেম্বর। এরপর ২০ লাখে পৌঁছায় এ বছর ১৬ জানুয়ারি।

কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা ২০ লাখে পৌঁছাতে সময় লেগেছিল ঠিক এক বছর পাঁচ দিন। তা দ্বিগুণ হতে ছয় মাসও লাগল না।

জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাবে, গত এক সপ্তাহে বিশ্বে প্রতিদিন গড়ে ৭ হাজার ৯০০ মৃত্যুর তথ্য নথিভুক্ত হয়েছে।

সেই হিসেবে বিশ্বের মহামারী পরিস্থিতি এখন গত জানুয়ারির তুলনায় ভালো। ওই সময় প্রতিদিন গড়ে ১৪ হাজার ৭০০ মৃত্যুও হয়েছে। তবে গতবছরের জুলাইয়ের তুলনায় এখন মৃত্যু হচ্ছে বেশি। সে সময় দৈনিক গড় মৃত্যু ছিল পাঁচ হাজারের মত।

সিএনএন জানিয়েছে, ৪০ লাখ মৃত্যুর খবর যখন এল, তখন যুক্তরাষ্ট্র আর ইউরোপে দৈনিক নতুন শনাক্ত রোগী আর মৃত্যুর সংখ্যা কমে আসতে শুরু করেছে। এসব দেশ তাদের জনসংখ্যার উল্লেখযোগ্য অংশকে ইতোমধ্যে টিকা দিতে পেরেছে।  

কিন্তু ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, বাংলাদেশ, ভিয়েতনামসহ এশিয়ার অনেক বেশেই নতুন সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়ছে। টিকা পাওয়ার জন্য এখনও চেষ্টা চালিয়ে যেতে হচ্ছে এসব দেশকে। আপাতত তারা কঠোর লকডাউন দিয়ে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করছে।

বিভিন্ন দেশে সংক্রমণ বাড়ার পেছনে এখন বড় ভূমিকা রাখছে করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক ডেল্টা ধরন। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজেস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের তথ্য অনুযায়ী, সেখানে নতুন রোগীদের অর্ধেকের বেশি এই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের শিকার।   

ধনী দেশগুলো করোনাভাইরাসের টিকার পাশাপাশি চিকিৎসা সরঞ্জাম মজুদ করে রাখায় তাদের কঠোর সমালোচনা করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদ্রোস আধানম গ্যাব্রিয়েসুস। পাশাপাশি বিধিনিষেধ তুলে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার পরিকল্পনায় উদ্বেগ জানিয়ে তিনি বলেছেন, ধনী দেশগুলো এমন ভাব করছে, যেন মহামারী বুঝি শেষ হয়ে গেছে।  

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরুরি বিভাগের পরিচালক মাইকেল রায়ান বলেছেন, টিকা দেওয়ার হার ভালো হলেও ভাইরাসের সংক্রমণ নতুন করে বাড়ার ঝুঁকি থেকে যায়।

“এই সময়ে বিধিনিষেধ তুলে ফেলার ক্ষেত্রে আমি সর্বোচ্চ সতর্কতা নিতে বলব। কারণ এর ফল ভালো নাও হতে পারে।”

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

দোহারে বাসায় পৌঁছে দেয়ার কথা বলে ধর্ষণ,প্রধান আসামি মনি র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

করোনায় ৪০ লাখ মৃত্যুর মাইলফলকে বিশ্ব

Update Time : 07:04:13 am, Thursday, 8 July 2021

ডেস্ক : পৃথিবী নজিরবিহীন এক মহামারীর কবলে পড়ার পর পেরিয়ে গেছে দেড় বছর; এই সময়ে করোনাভাইরাস কেড়ে নিয়েছে অন্তত ৪০ লাখ মানুষের প্রাণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই দুঃখজনক মাইলফলকে পৌঁছানোর খবর দিয়ে সতর্ক করেছে সেইসব ধনী দেশকে, এশিয়ায় সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির মধ্যেও যারা বিধিনিষেধ শিথিল করার পরিকল্পনা করছে।

জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় এ সঙ্কটের শুরু থেকে হালনাগাদ তথ্য নিয়ে নিয়মিত যে টালি প্রকাশ করে আসছে, বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ২১ মিনিটে সেখানে মৃত্যুর সংখ্যা ৪০ লাখ ৬৪১ জনে পৌঁছায়।

এর মধ্যে এক তৃতীয়াংশ মানুষের মৃত্যু হয়েছে তিন মহাদেশের মাত্র তিনটি দেশে। এই তালিকার শীর্ষে থাকা যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৬ হাজারের বেশি মানুষ, যা বিশ্বের মোট মৃত্যুর ১৫ শতাংশ। ব্রাজিলে ৫ লাখ ২৮ হাজার এবং ভারতে ৪ লাখ ৪ হাজার মানুষের মৃত্যুর তথ্য এসেছে সরকারের খাতায়। 

বিশ্বজুড়ে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পৌঁছেছে সাড়ে ১৮ কোটিতে। এর ৪৪ শতাংশের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে সেই যুক্তরাষ্ট্র, ভারত আর ব্রাজিলে। ৩ কোটি ৩৭ লাখ শনাক্ত রোগী নিয়ে এ তালিকাতেও সবার উপরে যুক্তরাষ্ট্র।

এসব সংখ্যা হিসাব করা হয়েছে সরকারি তথ্যের ভিত্তিতে। বিশ্বের অনেক দেশে এখনও করোনাভাইরাস পরীক্ষার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। ফলে আক্রান্ত ও মৃত্যুর অনেক তথ্যই এ হিসাবের বাইরে থেকে গেছে বলে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের ধারণা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদ্রোস আধানম গ্যাব্রিয়েসুসও বলেছেন, ৪০ লাখ মৃত্যুর এই সংখ্যা বাস্তবতার তুলনায় ‘অনেক কম’। তার ভাষায় বিশ্ব এখন মহামারীর এক বিপজ্জনক মোড়ে পৌঁছেছে।

২০১৯ সালের শেষে নতুন এক করোনাভাইরাসের প্রকোপের কথা বিশ্বকে জানিয়েছিল চীন। সেখানে প্রথম মৃত্যুর খবর এসেছিল ২০২০ সালের ১১ জানুয়ারি, নতুন এক করোনাভাইরাসে প্রথম মৃত্যুর খবর দিয়েছিল চীন। সেই সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়ায় ২৯ সপ্টেম্বর। এরপর ২০ লাখে পৌঁছায় এ বছর ১৬ জানুয়ারি।

কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা ২০ লাখে পৌঁছাতে সময় লেগেছিল ঠিক এক বছর পাঁচ দিন। তা দ্বিগুণ হতে ছয় মাসও লাগল না।

জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাবে, গত এক সপ্তাহে বিশ্বে প্রতিদিন গড়ে ৭ হাজার ৯০০ মৃত্যুর তথ্য নথিভুক্ত হয়েছে।

সেই হিসেবে বিশ্বের মহামারী পরিস্থিতি এখন গত জানুয়ারির তুলনায় ভালো। ওই সময় প্রতিদিন গড়ে ১৪ হাজার ৭০০ মৃত্যুও হয়েছে। তবে গতবছরের জুলাইয়ের তুলনায় এখন মৃত্যু হচ্ছে বেশি। সে সময় দৈনিক গড় মৃত্যু ছিল পাঁচ হাজারের মত।

সিএনএন জানিয়েছে, ৪০ লাখ মৃত্যুর খবর যখন এল, তখন যুক্তরাষ্ট্র আর ইউরোপে দৈনিক নতুন শনাক্ত রোগী আর মৃত্যুর সংখ্যা কমে আসতে শুরু করেছে। এসব দেশ তাদের জনসংখ্যার উল্লেখযোগ্য অংশকে ইতোমধ্যে টিকা দিতে পেরেছে।  

কিন্তু ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, বাংলাদেশ, ভিয়েতনামসহ এশিয়ার অনেক বেশেই নতুন সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়ছে। টিকা পাওয়ার জন্য এখনও চেষ্টা চালিয়ে যেতে হচ্ছে এসব দেশকে। আপাতত তারা কঠোর লকডাউন দিয়ে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করছে।

বিভিন্ন দেশে সংক্রমণ বাড়ার পেছনে এখন বড় ভূমিকা রাখছে করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক ডেল্টা ধরন। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজেস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের তথ্য অনুযায়ী, সেখানে নতুন রোগীদের অর্ধেকের বেশি এই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের শিকার।   

ধনী দেশগুলো করোনাভাইরাসের টিকার পাশাপাশি চিকিৎসা সরঞ্জাম মজুদ করে রাখায় তাদের কঠোর সমালোচনা করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদ্রোস আধানম গ্যাব্রিয়েসুস। পাশাপাশি বিধিনিষেধ তুলে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার পরিকল্পনায় উদ্বেগ জানিয়ে তিনি বলেছেন, ধনী দেশগুলো এমন ভাব করছে, যেন মহামারী বুঝি শেষ হয়ে গেছে।  

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরুরি বিভাগের পরিচালক মাইকেল রায়ান বলেছেন, টিকা দেওয়ার হার ভালো হলেও ভাইরাসের সংক্রমণ নতুন করে বাড়ার ঝুঁকি থেকে যায়।

“এই সময়ে বিধিনিষেধ তুলে ফেলার ক্ষেত্রে আমি সর্বোচ্চ সতর্কতা নিতে বলব। কারণ এর ফল ভালো নাও হতে পারে।”