স্পোর্টস ডেস্ক : সুপার লিগে উঠলেও মোহামেডান যেন এখন অফ ফর্মের প্লেয়ারদের ‘ডিপো।’ অন্তত চার থেকে পাঁচজন ব্যাটসম্যান নিজেকে হারিয়ে খুঁজছেন। তাই আগের রাতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনীর বিপক্ষে ৪২ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল সাদা-কালোরা। তারপরও পেসার আবু হায়দার রনি আর ক্যারিয়ারের স্বর্ণ সময় পিছনে ফেলে আসা মাহমুদুল হাসান লিমনের হাত ধরে ১৩৩ রান করেছিল মোহামেডান।
রাতটুকু পার করে আকাশি জার্সিদের বিপক্ষে সেই রানটুকুও করতে পারল না অনেক তারকার দল গাজী গ্রুপ। মাহেদি হাসান (৮ বলে ৩), ইয়াসির আলী (১৭ বলে ১২), মাহমুদউল্লাহ (১৭ বলে ১৬), জাকির হাসান (২৫ বলে ২৭), আরিফুল হক (০), আকবর আলীরা (০) ব্যর্থতার মিছিলে অংশ নিলেন। সৌম্য সরকার ২৪ বলে ৩০, মুমিনুল হকের ১২ বলে ২৫ রানের ছোট্ট ঝড়ও পুঁজিটা তাই বড় করে দিতে পারল না।
আবাহনীর তিন পেসার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মেহেদি হাসান রানা আর তানজিম হাসান সাকিবের বলে হাত খুলে খেলে লড়াকু ও চ্যালেঞ্জিং পুঁজি গড়া বহুদূরে, দাঁড়াতেই পারেনি মাহমুদউল্লাহর দল।
বল হাতে ওপেন করা সাইফউদ্দিন বুদ্ধি আর বলের কারুকাজের সুনিপুণ মিশেলে গাজীর টপঅর্ডারে ভাঙন ধরান। আবার ব্যাটিংয়ের লেজও মুড়িয়ে দেন।
সাইফউদ্দিনের ৪ ওভারে আউট হন আবাহনীর চার উইলোবাজ-মাহেদি হাসান, ইয়াসির আলী রাব্বি, আকবর আলী ও নাসুম আহমেদ। অন্যদিকে মেহেদি হাসান রানা ফিরিয়ে দেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ, আরিফুল হক ও মুমিনুল হককে।
আর তানজিম সাকিবের শিকার হয়েছেন জাকির হাসান ও মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ। গাজী গ্রুপের অপর উইকেটি পান মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। তার বলে ডিপ কভারে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন গাজী গ্রুপ ওপেনার সৌম্য সরকার।
বড় ইনিংস খেলে দলকে লড়াকু পুঁজি গড়ে দিতে না পারলেও গাজী গ্রুপের দুজন মাত্র ব্যাটসম্যান ছিলেন সাবলীল। দুজনই বাঁহাতি, একজন সৌম্য সরকার, অন্যজন মুমিনুল হক।
শুরু দেখে মনে হচ্ছিল সৌম্য কিছু একটা করে ফেলবেন। আবাহনীর সফলতম বোলার সাইফউদ্দিন ফ্লিক করে ব্যাকওয়ার্ড স্কোয়ার লেগের ওপর দিয়ে ছক্কা দিয়ে শুরু। তারপর সাইফউদ্দিনের বোলিংয়ে আরও তিনটি বাউন্ডারি আর তানজিম সাকিবের বলে আরেক ছক্কা হাঁকিয়ে সৌম্য বেশ আস্থা ও আত্মব্শ্বিাসে পৌঁছে গিয়েছিলেন ত্রিশের ঘরে।
কিন্তু তারপর মোসাদ্দেকের সাদামাটা অফস্পিনে অফসাইডে তুলে মারতে গিয়ে ব্যর্থ হলেন বাঁহাতি এই ড্যাশিং ব্যাটসম্যান। বল ব্যাটের ভেতরের অংশে লেগে চলে গেল ডিপ পয়েন্ট আর কভারের মাঝখানে দাঁড়ানো ফিল্ডারের হাতে।
অন্যদিকে মুমিনুল ৭ নম্বরে নেমে ৫ বাউন্ডারিতে ১২ বলে ২৫ করার পর খুব দৃষ্টিকটু আউট হয়েছেন। বাঁহাতি পেসার মেহেদি হাসান রানার বলে ডাউন দ্য লেগ ফ্লিক করতে গিয়ে উইকেট কিপার মুশফিকের গ্লাভসে ধরা পড়ে সাজঘরে ফেরেন মুমিনুল।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের আউটটি আরও বেশি দৃষ্টিকটু। এই মেহেদি হাসান রানার বলেই স্কুপ করতে গিয়ে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়েছেন গাজী গ্রুপ অধিনায়ক। আর এক্সট্রা কভারে ডান দিকে শরীর ফেলে বাজপাখির মত ক্যাচ লুফে ইয়াসির আলী রাব্বিকে ফিরিয়ে দিয়েছেন লিটন দাস।
গাজী গ্রুপের অনেক তারকার ভিড়ে একজনের ব্যর্থতা চোখে পড়ছে না। তবে সবচেয়ে করুণ অবস্থা আকবর আলীর। যুব বিশ্বকাপের ফাইনালের জয়ের নায়ক আকবর আজ সাইফউদ্দিনের প্রথম বলে লেগবিফোর উইকেটের জোরালো আবেদন থেকে বেঁচে পরের বলেই দাঁড়িয়ে থেকে হয়েছেন বোল্ড।